HS Bengali মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র

HS Bengali মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র

প্রশ্ন ১: “কে বাঁচায়, কে বাঁচে” ছোটগল্প অবলম্বনে মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্রটি পর্যালোচনা করো।

উত্তর: সাম্যবাদী কথাকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় “”কে বাঁচায়, কে বাঁচে” গল্পে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের মন্বন্তরকে কেন্দ্র করে অনাহারক্লিষ্ট দুর্ভিক্ষপীড়িত এক নগরাঞ্চলের চিত্র এঁকেছেন।
গল্পের মুখ্য চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়। ঘটনার বুনোন ক্রমান্বয়ে যত আঁটোসাঁটো হয়েছে, মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্রের বিভিন্ন দিকগুলি ততই প্রকটভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
পাঠকের চোখে ধৃত দিকগুলি হল-

মৃত্যুঞ্জয়ের স্বরূপ:

“কে বাঁচায়, কে বাঁচে” গল্পে মৃত্যুঞ্জয় একজন ছাপোষা, শান্ত, নিরীহ, মধ্যবিত্ত কেরানি। নয়জনের সংসার তার একার মাইনেতে না চলায় প্রতিমাসে ধার করতে হয়। তবুও মোটামুটি একটা চাকরিকে সম্বল করে নির্বিবাদে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করে মৃত্যুঞ্জয়।

ঐতিহ্য আদর্শের কল্পনা-তাপস:

গতানুগতিক জীবনযাত্রার মধ্যেও মৃত্যুঞ্জয়ের স্বকীয় কিছু ভাবনা ছিল। সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য বিষয়ে তার একান্ত নিজস্ব কিছু বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাস ভাবপ্রবণ আদর্শবাদের মতো নয়, বরং অনেক বেশি মজবুত।

সংবেদনশীল-আবেগপ্রবণ:

অফিস যাওয়ার পথে রাস্তায় অনাহারে মৃত্যু দেখে সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়। মৃত্যুঞ্জয় এতটাই সংবেদনশীল, এতটাই আবেগপ্রবণ যে তার মনের যন্ত্রণা শরীরের উপর প্রভাব ফেলে। অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা তাকে সমস্যার গভীর পর্যন্ত ভাবায়।

সহমর্মী:

মৃত্যুঞ্জয়ের মর্মবেদনা দিনে দিনে এতই প্রগাঢ় হয় যে, অফিস সংসার সবকিছু উপেক্ষা করে সে কেবলই অভুক্ত মানুষের কল্যাণে মগ্ন থাকে। সংসার নির্বাহের চিন্তা না করে মাসের পুরো মাইনেটা নিখিলের হাতে তুলে দেয় কোনো রিলিফ ফান্ডে দেওয়ার জন্য। শুধু তাই নয়, নিজে একবেলা না খেয়ে সেই খাবার অভুক্তদের মাঝে বিলিয়ে দেয়। তাঁদের দুঃখযন্ত্রণা জানার জন্য সে ফুটপাত বা লঙ্গরখানায় যেতেও পিছপা হয় না।

দায়িত্বজ্ঞানহীনবৃহৎ স্বার্থ চরিতার্থ করতে ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন:

মৃত্যুঞ্জয় রাস্তার নিরন্ন মানুষগুলোর উপকার করার নেশায় মেতে উঠেছিল, কিন্তু স্ত্রী-পুত্র-কন্যা কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের কথা ভাবেনি। সংসার খরচের টাকা রিলিফ ফান্ডে দেওয়ার পর কীভাবে সংসার চলবে সে কথা তো ভাবেইনি উপরন্তু কাউকে কিছু না বলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়ে স্ত্রী ও অন্যদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। সমাজের বৃহৎ অংশের কল্যাণের কথা ভেবে স্বীয় পরিবারের স্বার্থকেও জলাঞ্জলি দিতে দ্বিতীয়বার ভাবেনি সে।

অনুশোচনাগ্রস্থ-অন্তর্দ্বগ্ধ:

সংবেদনশীল মৃত্যুঞ্জয় ফুটপাতে মৃত্যুর জন্য নিজেকে দায়ী করেছিল। নিজেকে অপরাধী মনে করা মৃত্যুঞ্জয়ের বিবিকের দংশনে আত্ম-অনুশোচনা ক্রমে পরিণত হয় আত্ম-যন্ত্রনায়।

বাস্তব জ্ঞান বর্জিত:

অভুক্ত মানুষের সেবার জন্য নিজে না খেয়ে যেভাবে অকাতরে খাবার বিলিয়ে দিত তা একপ্রকারের আত্মহনন। নিখিলের মতে- ওটা পাশবিক স্বার্থপরতা। কথায় আছে- নিজে বাঁচলে বাপের নাম। তাই নিজেরা না খেয়ে অপরকে খাওয়ানোর মতো মহানুভবতা চরম বাস্তব বর্জিত পদক্ষেপ।

মহত্তম মানবতাবোধ:

শোষিত শ্রেণীর সঙ্গে একাত্ম হওয়ার জন্য মৃত্যুঞ্জয় নির্দ্বিধায় সাধারণ মধ্যবিত্ত মানসিকতা ঝেড়ে ফেলে সর্বহারাদের স্তরে ভিক্ষাপাত্র হাতে দাঁড়িয়েছে – এটি নিঃসন্দেহে মহত্তম মানবতাবোধেরই পরিচায়ক।

➤ HS English Notes: Click Here
কে বাঁচায় কে বাঁচে SAQ প্রশ্ন উত্তর: Click Here
➤ Subscribe our YouTube channel: Click Here

HS Bengali Suggestion | HS Bengali First Chapter Important MCQ | Class 12 Bengali Notes | Higher Secondary Bengali Important Question Answer | Class 12 Bengali First Chapter Question Answer | hs Bengali first chapter | HS Bengali Syllabus HS Bengali Ke-Bachay-Ke-Bache Question-Answer HS Bengali মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র

উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন উত্তর | উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর

HS Bengali মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র

Leave a Comment