আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু প্রবন্ধ রচনা

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু প্রবন্ধ রচনা- ক্লাস 5 থেকে ক্লাস 10 পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা। আশাকরি তারা উপকৃত হবে।

জগদীশচন্দ্র বসু

ভূমিকা:

যে সমস্ত বৈজ্ঞানিক ভারতবর্ষকে জগত সভ্যতায় শ্রেষ্ঠ আসন এনেদিয়েছেন, যাদের গৌরবোজ্জ্বল কৃত্তিতে আজও আমরা গর্বিত বোধ করি তাদেরই একজন হলেন বাঙালি বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস। জগদীশচন্দ্রের স্পর্শে বাঙালির বৈজ্ঞানিক মনন পেয়েছিল এক সার্বিক স্বীকৃতি।

জন্ম ও শিক্ষা:

জগদীশচন্দ্র বসুর জন্ম ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ৩০ নভেম্বর। জন্মস্থান ময়মনসিংহ হলেও, তার বাড়ি আদি বাড়ি ঢাকা জেলার রাঢ়িখাল গ্রাম। পিতার নাম ভগবানচন্দ্র বসু, একজন ডেপুটি কালেক্টর।

ফরিদপুর শহরে ঈশান বিদ্যালয় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে তিনি কলকাতায় এসে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকেই তিনি ১৮৮০ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে।

এরপর তিনি কেমব্রিজ থেকে বিদ্র এবং লন্ডন থেকে বিএস সি পাস করেন। এরপর দেশে ফিরে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।

কিন্তু কর্মরত অবস্থায় তিনি তিন বছর কোন বেতন গ্রহণ করেননি। ভারতীয় এবং শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে বেতন ; কাঠামোগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে এই ছিল তার আশ্চর্য প্রতিবাদ।

আবিষ্কার:

জগদীশচন্দ্র বসুর সমগ্র গবেষণা ধারাকে তিনটি পর্যায়ে বিন্যস্ত করা যায়। প্রথম- বিদ্যুৎ, দ্বিতীয়- চুম্বক তরঙ্গ, তৃতীয়- উদ্ভিদ ও প্রাণীর পেশির মধ্যে তুলনামূলক শারীর বিদ্যা বিষয়ক গবেষণা।

প্রাথমিকভাবে জগদীশচন্দ্র বসুই বিনা তারে বার্তা প্রেরণের উপায় আবিষ্কার করে। তিনি একমাইল দূরত্বে বেতার বার্তা পাঠানোর পরীক্ষা নিরীক্ষায় সফল হয়েছিলেন।

কিন্তু ইতালির বিজ্ঞানী মাকারী বেতার যন্ত্রের আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। কারণ জগদীশচন্দ্র ইউরোপে গিয়ে নিজের আবিষ্কার সর্বসমক্ষে দেখানোর আগেই মার্কনি দু মাইল দূরে বিনা তারে সংবাদ পাঠানোর উপায় উদ্ভাবন করেন।

তিনি ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ৩০ নভেম্বর বসু বিজ্ঞান মন্দির আবিষ্কার করেন। এই বসু বিজ্ঞান মন্দির বিজ্ঞান সাধনা ও বিজ্ঞান চর্চার মহা তীর্থভূমি।

সাহিত্য প্রীতি:

বিজ্ঞান গবেষণার সাথে জগদীশচন্দ্র বসু সাহিত্য সৃষ্টিতেও অসামান্য কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথ ও জগদীশচন্দ্রের পারস্পরিক চিঠিগুলি বিজ্ঞান সাধক ও সাহিত্য সাধকের নিবিড় বন্ধুত্বের সম্পর্ক যেমন প্রকাশ, তেমনি জগদীশচন্দ্রের সাহিত্য প্রীতির দিকটিও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
অব্যক্ত গ্রন্থে সাহিত্য স্রষ্টা জগদীশ চন্দ্রের লেখক মনের পরিচয় মেলে। তার লেখা ভ্রমণ কাহিনীগুলিতে অন্য এক জগদীশ চন্দ্রের পরিচয় পাঠকের সামনে এসে উপস্থিত হয়।

উপসহার:

বর্তমানে বাংলা ভাষায় যে উন্নততর জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার প্রবণতা দেখা দিয়েছে, আচার্য জগদীশচন্দ্রের বিজ্ঞান গবেষণার মধ্যেই তার প্রকৃত সূত্রপাত ঘটেছিল।
তিনি এক অব্যক্ত জগতের প্রাণের বাণী সমগ্র পৃথিবীর সামনে উম্মাচন করে দিয়েছেন।

আরও রচনা দেখো:-

1. বিজ্ঞান ও কুসংস্কার

2. দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

3. বিজ্ঞান: আশীর্বাদ না অভিশাপ

4. মোবাইল ফোনের সুফল ও কুফল

5. মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চা

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে ১৫০ টি শব্দের মধ্যে একটি প্রবন্ধ রচনা লেখো। জগদীশচন্দ্র বসু রচনা

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ভিজিট করো: TextbookPlus