বর্ষাকাল রচনা
বর্ষাকাল রচনা
ভূমিকা:
বাংলা ঋতুরাজ্যে বর্ষা হলো দ্বিতীয় ঋতু। আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাসকে বর্ষাকাল বলে। আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত আমাদের দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। ফলে বর্ষাকালের সময় সীমানাও বেড়ে যায়। গ্রীষ্মকালে প্রচুর তাপে নদী, নালা, খাল, বিল, পুকুর, দীঘি শুকিয়ে যায়। গাছপালা শুকিয়ে মরার মত হয়। গরমে পশুপাখি মানুষজন অস্থির হয়ে যায়। বর্ষার আগমনে গাছপালা পশুপাখি মানুষজন যেন প্রাণ ফিরে পায়।
বর্ষার রূপ:
আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বর্ষার আসল রূপটি দেখা যায়। বেশি সময় আকাশ কালো মেঘে ঢাকা থাকে। গুরু গুরু করে মেঘ ডাকে, বিদ্যুৎ চমকায় ও বাজ পড়ে। যখন-তখন ঝমঝম করে বৃষ্টি নামে। বর্ষাকালে পুকুর, দীঘি, খাল, বিল, নদী, নালা জলে থই থই করে। এই সময় কদম, কেতকী, জুই, রজনীগন্ধা প্রভৃতি ফুল ফোটে। চারিদিকে সতেজ সবুজ গাছপালা, কালো মেঘের বুকে বিদ্যুতের ঝলক, বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ, ব্যাঙের ডাক সব মিলিয়ে বর্ষার প্রকৃতি অপরূপ শোভা ধারণ করে। তাই বর্ষাকে ঋতুর রানী বলা হয়।
সুবিধা ও অসুবিধা:
বর্ষার আগমনে কৃষকের মুখে হাসি ফোটে। মাঠে মাঠে চাষাবাদের কাজ শুরু হয়। বাঙালির প্রধান খাদ্য শস্য ধানের চাষ এই সময় থেকে ভালো হয়। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে বন্যা হয়। বন্যার ফলে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়ে, জীবজন্তু ও মানুষের অশেষ দুর্গতি হয় ।বর্ষাকালে ম্যালেরিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। পোকামাকড় ও সাপের উপদ্রব বাড়ে। এই সময় অতি বর্ষণে অনেক সময় শহর এবং গ্রাম-উভয় ক্ষেত্রে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্ন হয়।
উপসংহার:
বর্ষাকালে যত দুঃখ কষ্ট থাকুক না কেন বর্ষা আমাদের কাছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ঋতু। কারণ এই ধ্বংসের রূপের মধ্যে লুকিয়ে আছে সৃষ্টির রূপ।
আরও পড়ুন: