Poribesh Rokhay ChatroChatrider Vumika // পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা

“এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার”
—– সুকান্ত ভট্টাচার্য

ভূমিকা:

বর্তমান সময়ে প্রগতি ও উন্নয়নের যুগল বন্ধন সমাজ, পরিবেশ ও মানব জীবন ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত। অথচ সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ আজ নানা কারণে দূষিত। এখন জীবকুলের সুস্থ-সবল স্বাভাবিক ভাবে বাঁচার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। এই ভারসাম্য রক্ষায় সমাজের সকলের পাশাপাশি ছাত্র সমাজের এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

যান্ত্রিক সভ্যতা ও পরিবেশের ভারসাম্য:

আধুনিক যুগের যন্ত্রসভ্যতার প্রসারের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। বৃক্ষ ছেদন, নগরায়ন, কল কারখানা নির্মাণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার প্রভৃতির ফলে পরিবেশ নানাভাবে দূষিত হয়ে যাচ্ছে। তবুও আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে নিয়ে মেতে রয়েছি। উপযুক্ত মনোযোগ দিতে পারেনি পরিবেশের ভারসাম্যের দিকে।

ভারসাম্যের সংকটকালীন অবস্থা:

বর্তমানে বায়ু, জল, মাটি ভীষণভাবে দূষিত হচ্ছে। কল কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি করে দিচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে রাসায়নিক সার, কীটনাশক, আগাছানাশক এর ব্যবহার ও কলকারখানা বর্জ্য পদার্থ দ্বারা জল দূষিত হচ্ছে। যানবাহনের শব্দ, বাজির শব্দ, শব্দ দূষণের মাত্রা কে ত্বরান্বিত করছে। যার ফলে খরা, বন্যা তথা প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনছে।

ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা:

পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে।

প্রথমত, নিজের এলাকায় আবর্জনা যাতে জমতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা। যদিবা আবর্জনার স্তুপ জমা হয় সেই আবর্জনাগুলো কে নির্দিষ্ট সময় মতো ফাঁকা স্থানে পুড়িয়ে ফেলা।

দ্বিতীয়ত, কয়লা পোড়ানোর ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

তৃতীয়ত, জল দূষণ রোধ করতে নিজের এলাকায় ব্যবহৃত জলাশয় গবাদিপশুর স্নান ও পুকুর পাড়ে প্রাতঃকৃত্য বন্ধ করা।

চতুর্থত, রাস্তার ধারে বিদ্যালয় কিংবা পড়ে থাকা জমিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেওয়া ও বন সংরক্ষণ করা।

পঞ্চমত, বেআইনিভাবে গাছ কাটা বন্ধ করা।

ষষ্ঠত, ইলেকট্রিক হর্ন বাজানো বন্ধ করা।

প্রবন্ধ রচনা: পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার

সচেতনতার প্রসার ঘটানো:

বেতার, দূরদর্শন, চলচ্চিত্রকে ও সোশ্যাল মিডিয়া সাহায্য নিয়ে জল বাতাস বিশুদ্ধ রাখা শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা স্থানীয় এলাকার পরিবেশ ভারসাম্যতা নিয়ে আলোচনা সভা ও পথ নাটিকার আয়োজন করতে পারে।

উপসংহার:

জীবনের সুস্থভাবে বাঁচার জন্য প্রয়োজন বিশুদ্ধ পরিবেশ। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের গভীর তাৎপর্যমণ্ডিত ভূমিকা রয়েছে। কারণ আজকের ছাত্র সমাজ, ভবিষ্যতের সচেতন দায়িত্বশীল নাগরিক। সে কারণে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তাদের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। তাই ছাত্রসমাজ বর্তমান বিশ্বের মানুষের কাছে প্রত্যাশা করে –

“দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর,
লও যত লৌহ লোষ্ট্র কাষ্ঠ ও প্রস্তর”

Leave a Comment

CLOSE