অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্ন বিচিত্রা সমাধান | তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ২০২৩

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্ন বিচিত্রা সমাধান | তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ২০২৩

তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ২০২৩
অষ্টম শ্রেণী

বিষয়: ইতিহাস
মডেল প্রশ্নপত্র: ১

১. প্রশ্নমান: ১

১.১ আত্মীয় সভা কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে।

১.২ স্বামী বিবেকানন্দ কবে শিকাগো ধর্ম সম্মেলনে যোগদান করেন?
উত্তর: ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে।

১.৩ হুল শব্দের অর্থ কি?
উত্তর: বিদ্রোহ।

১.৪ ভারতের জাতীয় কংগ্রেস কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে।

১.৫ কবে বঙ্গভঙ্গের সরকারি ঘোষণা করা হয়?
উত্তর: ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জুলাই।

১.৬ পিটের ভারত শাসন আইন কবে বলবৎ হয়?
উত্তর: ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে ।

১.৭ কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৮০০খ্রিস্টাব্দে ।

১.৮ বক্সারের যুদ্ধ কবে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর: ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে।

১.৯ বিপ্লবী সূর্যসেনের ফাঁসি কবে হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২ জানুয়ারি ।

১.১০ ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ কে ডাক দিয়েছেন?
উত্তর: মহাত্মা গান্ধী।

১.১১ কৃষক প্রজা পার্টির নেতা কে ছিলেন?
উত্তর: এ কে ফজলুল হক।

১.১২ কবে স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই আগস্ট।

১.১৩ সার্বভৌমিকতা আছে- বিহারের / সিকিমের / মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
উত্তর: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।

১.১৪ ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?
উত্তর: ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ।

১.১৫ বাংলায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করেন লর্ড কর্নওয়ালিস। (ঠিক না ভুল)।
উত্তর: ঠিক।

১.১৬ ______________ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি দশ সালা বন্দোবস্ত চালু করে।
উত্তর: ১৭৮৯।

১.১৭ বাম দিক ও ডানদিক মেলাও:
বামদিকডানদিক
A. সার্ভেয়ার জেনারেল
B. ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠী
C. সত্যশোধক সমাজ
D. হিন্দু প্যাট্রিয়ট
E. A Nation in Making
F. ঢাকা অনুশীলন সমিতি
a. জ্যোতিরাও ফুলে
b. হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
c. পুলিনবিহারী দাশ
d. জেমস রেনেল
e. ডিরোজিও
f. সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়

উত্তর:
A. সার্ভেয়ার জেনারেল —– d. জেমস রেনেল
B. ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠী —– e. ডিরোজিও
C. সত্যশোধক সমাজ —– a. জ্যোতিরাও ফুলে
D. হিন্দু প্যাট্রিয়ট —– b. হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
E. A Nation in Making —– f. সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
F. ঢাকা অনুশীলন সমিতি —– c. পুলিনবিহারী দাশ

১.১৮ বেমানান শব্দটি লেখ:
ধর্মনিরপেক্ষ, ধনতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক, সার্বভৌম।
উত্তর: ধনতান্ত্রিক।

১.১৯ _________ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে গণপরিষদ গঠিত হয়।
উত্তর: ১৯৪৬

১.২০ চৌরিচৌরার ঘটনা কবে সংঘটিত হয়?
উত্তর: ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে।

১.২১ দিল্লি চুক্তি কি?
উত্তর: ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৪ মার্চ গান্ধি ও লর্ড আরউইনের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তাকে দিল্লি চুক্তিও বলে।

১.২২ মহাত্মা গান্ধী খিলাফৎ আন্দোলনকে সমর্থন করেননি। (ঠিক না ভুল)
উত্তর: ভুল

১.২৩ ‘সারে জাহা সে আচ্ছা‘ কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর: মহম্মদ ইকবাল।

২. প্রশ্নমান: ২

২.১ কে, কবে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তর: উইলিয়াম জোনস ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।

২.২ উডের ডেসপ্যাচ কি?

উত্তর: বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের জন্য ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জুলাই একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন। এই নির্দেশনামা ‘চার্লস উডের প্রতিবেদন’ বা ‘উডের ডেসপ্যাচ’ নামে খ্যাত।

২.৩ কে, কবে আইন করে সতীদাহ প্রথা বন্ধ করেন?

উত্তর: রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে আইন প্রণয়ন করে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেন ।

২.৪ নব্যবঙ্গ আন্দোলন কাকে বলে?

উত্তর: এংলো ইন্ডিয়ান হেনরি লুই ভিভিয়ান রেজিও ছিলেন কলকাতার হিন্দু কলেজের তরুণ শিক্ষক। যুক্তিবাদী এই শিক্ষকের অনুগামী ছাত্রদের নব্য বঙ্গ বা ইয়ং বেঙ্গল বলা হয়।

২.৫ হিউম ড্যাফরিন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব কি?

উত্তর: হিউম ছিলেন একজন ইংরেজ সিভিল সার্ভেন্ট তার পুরো নাম অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম। ডাফরিন ছিলেন ভারতের ভাইসরয়। হিউম-ডাফরিন ষড়যন্ত্র বলতে বোঝায় যে হিউম ও ডাফরিনের ষড়যন্ত্রেই নাকি জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হয়েছে। জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার এই তত্ত হিউম-ডাফরিন ষড়যন্ত্র নামে পরিচিত।

২.৬ সভাসমিতির যুগ কাকে বলে?

উত্তর: উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে সাম্রাজ্যবাদী শাসকের বিরুদ্ধে মানুষের মনে জাতীয়তাবোধ জেগে ওঠে । এঐ সময় প্রথমে বাংলায় ও ক্রমে ক্রমে অনান্য প্রদেশে ও বিভিন্ন সভাসমিতি গড়ে উঠতে থাকে । সভাসমিতি গড়ে উঠার প্রাচুর্যতা দেখে অধ্যাপক ড. অনিল শীল এই সময়কাল কে ‘সভাসমিতির যুগ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২.৭ কাকে, কেন সীমান্ত গান্ধী বলা হত?

উত্তর: খান আবদুল গফফর খান কে সীমান্ত গান্ধী বলা হতো । তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের দূধর্ষ যুদ্ধপ্রিয় পাঠান উপজাতিকে গান্ধীজীর অহিংস মন্ত্রে দীক্ষিত করেছিলেন তাই তাকে সীমান্ত গান্ধী বলা হত ।

২.৮ স্বরাজ্যপন্থী কাদের বলা হত?

উত্তর: কংগ্রেসের মধ্যে চিত্তরঞ্জন দাশ ও মোতিলাল নেহেরু প্রমুখ নেতারা গান্ধিনীতি থেকে সরে আসার জন্য আহ্বান জানান । তাঁদের মতে সরকারি আইন পরিষদকে বয়কট না করে তাতে অংশগ্রহণ করে সরকারী নীতি ও কাজে বাধা দেওয়া যাবে । অন্যদিকে গান্ধি প্রথা পুরোনো পথেই চলতে উৎসাহী ছিলেন । ফলে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে চিত্তরঞ্জন দাশ ও মোতিলাল নেহেরু মিলে কংগ্রেস -খিলাফৎ স্বরাজ্য দল তৈরি করেন। এই গোষ্ঠীর অনুগামীদের বলা হতো স্বরাজ্যপন্থী।

২.৯ পাকিস্তান প্রস্তাব কি?

উত্তর: ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ আলি জিন্নাহের সভাপতিত্বে মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশনে মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক স্বশাসিত রাষ্ট্রের প্রস্তাব করা হয় । এই প্রস্তাবই ‘ পাকিস্তান প্রস্তাব ’ নামে পরিচিত । ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরোধিতা করে মুসলিম লিগ । সেই সময় প্রায় সব কংগ্রেস নেতাই জেলে বন্দি ছিলেন । এই সময়ই পাকিস্তানের ধারণাটিকে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়।

২.১০ র‍্যাডক্লিফ লাইন কি?

উত্তর: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে মাউন্টব্যাটেনের ভারত বিভাগের পরিকল্পনা কংগ্রেস ও লিগ মেনে নেয় । এই পরিকল্পনা অনুসারে বাংলা ও পাঞ্জাবকে ভাগ করার জন্য দুটি আলাদা সীমান্ত কমিশন গঠন করা হয় । দুই কমিশনের সভাপতি ছিলেন ব্রিটিশ আইনজীবী স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ । অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে র‍্যাডক্লিফ ভারত – বিভাজনের মানচিত্র বা র‍্যাডক্লিফ লাইন তৈরি করেন ।

২.১১ সংবিধান কাকে বলে?

উত্তর: সংবিধান বলতে বোঝায় কতকগুলি আইনের সমষ্টি। সেই আইন মোতাবেক কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। রাষ্ট্র যেহেতু একটি প্রতিষ্ঠান তাই রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সংবিধানের প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্রের নিরিখে সংবিধান হলো সেইসব আইনকানুন যার দ্বারা সরকারের ক্ষমতা, নাগরিকদের অধিকার এবং সরকার-নাগরিকদের সম্পর্ক পরিচালিত হয়। সংবিধান একটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক।

২.১২ ভারতের সংবিধানে ‘গণতান্ত্রিক’ শব্দটির তাৎপর্য কি?

উত্তর: ব্যাপক অর্থে গণতন্ত্র বলতে সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠার কথা বোঝায়। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানে গণতন্ত্র বলতে মূলত প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার বোঝানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে ভোট দিয়ে কেন্দ্র ও প্রদেশগুলির আইনসভায় এবং বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।

৩. প্রশ্ন মান: ৩/৪

৩.১ টীকা লেখ: মুন্ডা উলগুলান

উত্তর: বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে মুন্ডা উলগুলান বা মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল অন্যতম উপজাতীয় কৃষক বিদ্রোহ । এটি শুরু হয় , ( ১৮৯৯–১৯০০ খ্রিঃ ) । মুন্ডাদের জমি ধীরে ধীরে বহিরাগত বা দিথুদের হাতে চলে যায় । এছাড়া জমিদার , মহাজন , খ্রিস্টান মিশনারি ও ঔপনিবেশিক সরকারের প্রতি মুন্ডা কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে । মুন্ডারা বিশ্বাস করত বিরসা নানা রকম অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী । তাই মুন্ডা উলগুলানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে বিরসার শাসন প্রতিষ্ঠা করা । ঔপনিবেশিক প্রশাসনের দমন পীড়নের ফলে মুন্ডা উলগুলান পরাস্ত হয় ।

৩.২ টীকা লেখ: পন্ডিতা রমাবাঈ

উত্তর: ঊনিশ শতকে মেয়েদের শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিতে বেশ কিছু মহিলাও অগ্রসর হয়েছিলেন । এদের মধ্যে পশ্চিম ভারতে পণ্ডিতা রমাবাঈ ছিলেন অগ্রগণ্য । ব্রাহ্ম পরিবারের মেয়ে হয়েও তিনি একজন শুদ্রকে বিয়ে করেছিলেন । পরে বিধবা অবস্থায় নিজের মেয়েকে নিয়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে ডাক্তারি পড়েন । বিধবা মেয়েদের জন্য আশ্রম তৈরি করেন । তবে রক্ষণশীলদের অনেকেই রমাবাঈয়ের উদ্যে সমালোচনা করেছিলেন । এছাড়া মাদ্রাজে ভগিনী শুভলক্ষী ও বাংলায় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বিশেষ উল্লেখযোগ্য । উনিশ শতকের দ্বিতীয়ভাগে মেয়েদের শিক্ষার আওতায় আনার জন্য ব্রিটিশ প্রশাসন বিভিন্ন অনুদান দেওয়ার উদ্যোগ নেন ।

৩.৩ ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসের সুরাট অধিবেশনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: সুরাট অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচন নিয়ে চরমপন্থী ও নরমপন্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ নেয়। হই হট্টগোলের মধ্যে কোন রকমে সুরাট অধিবেশন শেষ হয়। কংগ্রেসের কার্যাবলী ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে চরমপন্থীদের বাদ দেওয়া হয়। চরমপন্থীরা কংগ্রেস থেকে সরে যায়। নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের বিভাজন সম্পূর্ণ হয়। এর ফলস্বরুপ সর্বভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন কার্যত ধাক্কা খায়।

৩.৪ কংগ্রেসের নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের মধ্যেকার পার্থক্য নির্দেশ করো।

উত্তর: নরমপন্থীরা আবেদন নিবেদন নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। তারা মনে করতেন ব্রিটিশ সরকারের কাছে সমস্যাগুলি ঠিকমতো তুলে ধরতে পারলে তার সমাধান হবে। অন্যদিক চরমপন্থীরা সংগ্রামের মাধ্যমে দাবি দাওয়া আদায়ের পক্ষপাতি ছিলেন। তারা কংগ্রেসের তিনদিনের অধিবেশনকে ‘তিন দিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করতেন।। কারণ নরমপন্থীদের দাবি দাওয়াকে ইংরাজ সরকার কোনো গুরুত্ব দিত না।

৩.৫ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা করো।

উত্তর: ৭০ বছরের মাতঙ্গিনী হাজরা ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নেন। তাঁর নেতৃত্বে আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। মেদিনীপুর জেলার তমলুকের বৃদ্ধা বিদ্রোহিনীর নেতৃত্বে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সমর্থনে প্রায় কুড়ি হাজার মানুষের মহামিছিল তমলুক থানা ও আদালত ভবন দখল করার জন্য অগ্রসর হয়। এই সময় পুলিশের গুলিতে মাতঙ্গিনী হাজরা মারা যান। তাঁর এই আত্মত্যাগ পরবর্তী প্রজন্মের নারীদের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেরণা জোগায়।

৩.৬ দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দোলন মহাত্মা গান্ধীর রাজনৈতিক জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করেছিল?

উত্তর:

৩.৭ খিলাফৎ আন্দোলনে মহাত্মা গান্ধীর ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

৩.৮ টীকা লেখ: ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা।

উত্তর:

৩.৯ টীকা লেখ: জেলা পরিষদ।

উত্তর:

৪. প্রশ্ন মান: ৮
৪.১ সমাজ ও শিক্ষা সংস্কারের ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তর: উনিশ শতকের বাংলায় প্রায় একক উদ্যোগে শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । শিক্ষা সংস্কারের ক্ষেত্রে তাঁর উদ্যোগেই ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য পরিবারের পাশাপাশি কায়স্থ ছেলেরাও সংস্কৃত কলেজে পড়ার সুযোগ পায় । বিদ্যাসাগর অনুভব করেছিলেন যে সংস্কৃতের পাশাপাশি ইংরেজি শিক্ষারও প্রয়োজন । তিনি বুঝেছিলেন মাতৃভাষা ও ইংরেজির মধ্যে সংযোগসাধন জরুরি । পাশাপাশি পাঠ্যসূচিতে গণিত চর্চাও তিনি অন্তর্ভুক্ত করেন । ১৮৫০ – এর দশকে ছাত্রদের জন্য বিদ্যাসাগর অনেকগুলি বই লেখেন । সহকারি স্কুল পরিদর্শক হিসেবে বাংলার বিভিন্ন জেলায় বিদ্যাসাগর কয়েকটি মডেল স্কুল তৈরি করেন । তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে প্রশাসনের তরফে যে সামান্য অর্থ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা হয় তা দিয়ে সমস্ত মানুষকে শিক্ষার আওতায় আনা সম্ভব নয় । তাই শিক্ষা বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা উচিত বলে বিদ্যাসাগর মনে করতেন । নারীদের শিক্ষাবিস্তারের জন্য তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের খরচে অনেকগুলি মেয়েদের স্কুল তৈরি করেন । বেথুন স্কুলে যাতে মেয়েরা পড়তে যায় তার জন্যও তিনি চেষ্টা করেন ।

৪.২ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

৪.৩ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশি আন্দোলন প্রকৃত গণআন্দোলন রূপে গড়ে উঠতে ব্যর্থ হয় কেন?

উত্তর: বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বঙ্গভঙ্গ রদ করার যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে তা ক্রমেই স্বদেশি আন্দোলনে পরিণত হয় । কিন্তু এই আন্দোলন প্রকৃত গণআন্দোলনে পরিণত হতে পারেনি । কারণ আন্দোলনের অধিকাংশ নেতা ছিলেন বড়ো শহরের শিক্ষিত ভদ্রলোক গোষ্ঠীর মানুষ । ফলে স্বদেশি নেতৃত্ব জনগণের উপযোগী কোনো সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি হাজির করতে ব্যর্থ হন । এছাড়া স্বদেশি জিনিস ব্যবহারের জন্য গরিবদের ওপর জুলুম করা হতো । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বদেশি দ্রব্যের দাম বেশি হওয়ায় উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি তা কিনলেও গরিব জনগণের তা কেনার ক্ষমতা ছিল না । পাশাপাশি স্বদেশি নেতৃত্ব যখন শ্রমিক ধর্মঘটের আয়োজন করতেন তা থেকে হিন্দুস্থানি ও বাগিচা শ্রমিকরা বাদ পড়ে যেতেন । ফলে দরিদ্র কৃষক ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ স্বদেশি আন্দোলনে সামিল হতে পারেননি । এছাড়া বেশ কিছু চরমপন্থী নেতা স্বদেশি আন্দোলনে ধর্মীয় প্রতীক ও দেবদেবীর ছবি ব্যবহার করেন । এই প্রসঙ্গে হিন্দু ঝোঁক ক্রমেই বেড়ে চলে । ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান ও বৈশব কৃষকরা এই আন্দোলনের সঙ্গে মানসিকভাবে যুক্ত হতে পারেনি ।

৪.৪ চরমপন্থী রাজনীতির উত্থানের মূল কারণ গুলি কি ছিল?

উত্তর:

৪.৫ ১৯৪২ এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের পরিচয় দাও।

উত্তর: ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধি ডাক দেন ‘ করেঙ্গে ইয়া মরেখো ” , ভারতজুড়ে এই আন্দোলনে নানান অংশের জনগণ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে । ওই বছরে ১ আগস্ট ব্রিটিশ সরকার আন্দোলনের প্রধান নেতাদের গ্রেফতার করে । ফলত নেতৃত্ববিহীন সাধারণ মানুষ ভারতের নানা জায়গায় স্বতস্ফূর্তভাবে আন্দোলন চালান । ভারত ছাড়ো আন্দোলন প্রথমদিকে মূলত শহরগুলিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে । জনগণের সঙ্গে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে হরতাল ও বিক্ষোভ চলতে থাকে । আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই আন্দোলনের ভরকেন্দ্র শহর থেকে গ্রামের দিকে সরে যেতে থাকে । ব্যাপক সংখ্যায় কৃষকরা এই আন্দোলনে যোগ দেন । বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অচল করে দেওয়া হয় । কয়েকটি অঞ্চলে আন্দোলনকারীরা জাতীয় সরকার গড়ে তোলে । মেদিনীপুরের তমলুক মহকুমায় সতীশচন্দ্র সামন্তের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার । ভারতছাড়ো আন্দোলন দমন করার জন্য সরকারের তরফে বিরাট সংখ্যক পুলিশ ও সেনাবাহিনী ব্যবহার করা হয়েছিল । তমলুকের বৃদ্ধা বিদ্রোহিনী মাতঙ্গিনী হাজরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান । বাস্তবে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর এত বড়ো বিদ্রোহ যে ভারতে হয়নি তা ব্রিটিশ প্রশাসন স্বীকার করে নিয়েছিলেন ।

৪.৬ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসু ও তার আজাদ হিন্দ বাহিনীর অবদান আলোচনা করো।

উত্তর: গান্ধীজী নেতৃত্বে ভারতের জনগণ যখন বিভিন্ন আন্দোলনে সাড়া জাগা ছিল , তখন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র আবির্ভাব ঘটে । তিনি গান্ধীজীর নেতৃত্ব কে স্বীকার করে নেন। অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয় থাকার জন্য তাকে জেলে যেতে হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু হলে তিনি জার্মানে যাত্রা করেন। জাপানে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ক্যাপ্টেন মোহন সিং ও রাহবিহারী বসু জাপানি যুদ্ধবন্দী- ব্রিটিশ বাহিনীর ভারতীয় সৈনিকদের নিয়ে সিংগাপুরে আজাদ হিন্দ বাহিনী তৈরি করেন। রাহবিহারী বসুর অনুরোধে, সুভাষচন্দ্র জার্মান থেকে জাপানে গিয়ে আজাদ হিন্দু বাহিনীর দায়িত্বভার নেন। ৪০ হাজার ভারতীয় যুদ্ধবন্দী এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের অনেকে আজাদ হিন্দ বাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে ২১ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ বা স্বাধীন ভারতের যুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিষ্ঠাতা ঘোষণা করেন । তিনি হন তার প্রধানমন্ত্রী এবং বাহিনী সর্বাধিনায়ক। খাদ্য এবং রসদ এর অভাবে আজাদ হিন্দ বাহিনী পরাজয়ের ঘটে, দিল্লি লালকেল্লায় বিচার শুরু করে ব্রিটিশ সরকার। নেতাজি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান । শোনা যায় তাইকুহু বিমান দুর্ঘটনায় তার তিনি প্রাণ হারান । যদিও তার মৃত্যু নিয়ে আজও রহস্য আছে।

৪.৭ ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাটি ব্যাখ্যা করো। প্রস্তাবনায় বর্ণিত সাধারণতন্ত্র শব্দটি কীভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে বলে তোমার মনে হয়।

উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের একটি প্রস্তাবনা আছে। এই প্রস্তাবনায় সংবিধানের আদর্শ ও উদ্দেশ্য ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তাবনাকে ‘সংবিধানের বিবেক’ বা সংবিধানের আত্মা বলা হয়। সংবিধানের মূল প্রস্তাবনায় ভারতকে একটি সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, প্রজাতন্ত্র’ বলা হয়েছে। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে সংবিধানের ৪২তম সংশোধনী অনুযায়ী ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ শব্দ দুটি যোগ করে ভারতকে ‘সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র’ বলে উল্লেখ হয়েছে। এই শব্দগুলির প্রত্যেকটির গভীর তাৎপর্য আছে। ‘সার্বভৌম’ বলতে বোঝায় ভারতবর্ষ অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে চরম ও চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী। ‘সমাজতন্ত্র’ বলতে উৎপাদনের উপকরণগুলির ওপর রাষ্ট্র তথা সমাজের মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং উৎপাদিত সম্পদের সমান ভাগ বোঝায়। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানে ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দটিতে মিশ্র অর্থনীতি অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ব্যক্তি মালিকানা নির্ভর অর্থনীতির মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক ধাঁচের সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।

👉 সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্টের প্রশ্নপত্র : Click Here

3rd Unit Test Question Papers Class 82023 

বাংলা ইংরেজীগণিত
পরিবেশ ও বিজ্ঞান ইতিহাসভূগোল
👉 আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করো: Click Here
Class-8 3rd-Unit-Test Question ইতিহাস

You may also like: Class VII Notes

Class 8 Third Unit Test 2022 History Question Paper Class 8 Third Unit Test History Suggestion

Class 8 3rd Unit Test ইতিহাস Question Paper 2022

WBBSE Class 8 Model Question Paper Unit Test Question Paper ইতিহাস Class VIII ইতিহাস Third Unit Test Question Paper pdf Download

Class 8 Third Term Test Itihas Question Paper

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্ন বিচিত্রা সমাধান | তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ২০২৩

Official Website: Click Here Class-8 Third-Unit-Test History Question

অষ্টম শ্রেণীর তৃতীয় ইউনিট টেস্টের ইতিহাস বিষয়ের প্রশ্নপত্র অষ্টম শ্রেণী রায় মার্টিন প্রশ্ন বিচিত্রা সমাধান

Class-8 3rd-Unit-Test History Question Class-8 3rd-Unit-Test History Question

অষ্টম শ্রেণী তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ইতিহাস প্রশ্নপত্র অষ্টম শ্রেণী রায় মার্টিন প্রশ্ন বিচিত্রা সমাধান

Class 8 Final Term Exam History Question Paper

অষ্টম শ্রেণী রায় মার্টিন প্রশ্ন বিচিত্রা সমাধান

অষ্টম শ্রেণী রায় মার্টিন প্রশ্ন বিচিত্রা সমাধান

Leave a Comment

CLOSE