Class-8 Bengali Channachara Question Answer

Class-8 Bengali Channachara Question Answer Class-8 Bengali ছন্নছাড়া Question Answer

এখানে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের ‘ছন্নছাড়া‘ প্রশ্নগুলির উত্তর আলোচনা করা হলো। আশাকরি এইগুলি ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়ক হবে।

শ্রেণী: অষ্টম বিষয়: বাংলা
ছন্নছাড়া
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
পাঠ্য পুস্তকের প্রশ্নগুলির উত্তর:

১.১ অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখ।
উত্তর: অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বইয়ের নাম হল- বেদে এবং প্রাচীর ও প্রান্তর।

১.২ তিনি কোন পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর: তিনি কল্লোল পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে যুক্ত ছিলেন।

২. নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর একটি বাক্যে লেখ:

২.১ কবি প্রথমে গাছটিকে কেমন অবস্থায় দেখেছিলেন?

উত্তর: কবি প্রথমে গাছটিকে প্রেতচ্ছায়া রূপে দেখেছিলেন যেটি শুকনো কাঠির কঙ্কালের মতো শুন্যের দিকে এলোমেলোভাবে ছড়ানো।

২.২ ‘ড্রাইভার বললে ,ওদিকে যাব না’।- ওদিকে না যেতে চাওয়ার কারণ কী?

উত্তর: ড্রাইভার ওদিকে যেতে চায়নি কারণ কয়েকটা ছন্নছাড়া বেকার ছেলে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে এবং সেদিকে গেলেই তারা লিফট চাইবে আর বলবে ঘুরিয়ে হাওয়া খাইয়ে আনতে।

২.৩ ‘তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে’। সড়কের মাঝখানে, পথে এসে দাঁড়ানোর কারণ কী?

উত্তর: বেকার যুবকদের আড্ডা দেওয়ার জন্য থাকা মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে বসার রকটাও লোপাট হয়ে যাওয়ায় তারা সড়কের মাঝখানে, পথে এসে দাঁড়িয়েছে।

২.৪ ‘আমি বললুম, না ওখান দিয়েই যাব’, – কবির ওখান দিয়েই যেতে চাওয়ার কারণ কী?

উত্তর: কবির ওখান দিয়েই যাওয়ার কারণ হলো- ওখান দিয়ে গেলে তার শর্টকাট হয়।

২.৫ ‘ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড়?’ – ওখানে কীসের ভিড়?

উত্তর: এক বেওয়ারিশ ভিখারি গাড়ি চাপা পড়াই ওখানে মানুষের ভিড় জমেছে।

২.৬ ‘কে সে লোক?’ – লোকটির পরিচয় দাও।

উত্তর: লোকটি সহায়-সম্বলহীন এক বেওয়ারিশ যে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে।

২.৭ ‘চেঁচিয়ে উঠলো সমস্বরে……….’- কি বলে তারা সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠলো?

উত্তর: দুর্ঘটনাগ্রস্ত ভিখারিটির দেহে প্রাণ আছে, প্রাণ আছে বলে তারা সমস্বরে চিৎকার করে উঠেছিল।

২.৮ ‘আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি’- কবি তাড়াতাড়ি নেমে পড়লেন কেন?

উত্তর: কবি ভিখারির দেহের রক্তের দাগ থেকে ভদ্রতা ও শালীনতা কে বাঁচানোর জন্য তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন।

২.৯ ‘ফিরে আসতেই দেখি…..’- ফেরার পথে কবি কী দেখতে পেলেন?

উত্তর: ফেরার পথে কবি দেখলেন, গলির মোড়ে শুকনো গাছটি সোনালী কচি পাতায়, গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলের সুগন্ধে আর রঙ-বেরঙের পাখিতে ভরে গিয়েছে।

২.১০’ অবিশ্বাস্য চোখে দেখলুম’- কবির চোখে অবিশ্বাসের ঘোর কেন?

উত্তর: আপাত প্রাণহীন, সূক্ষ্ম, নিরস, রুক্ষ গাছের মধ্যে লুকানো অন্তহীন সজীব প্রাণের প্রকাশ আর কঠোরতার বিপরীতে মাধুর্যের ব্যাপক আয়োজনে কবির চোখে অবিশ্বাসের ঘোর লেগে যায়।

৩. নির্দেশ অনুসারে নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:

৩.১ ‘ওই পথ দিয়ে
জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে’।- কবির যাত্রাপথের অভিজ্ঞতার বিবরণ দাও।

উত্তর: কবি তার এক বিশেষ প্রয়োজনে ট্যাক্সি করে যাচ্ছিলেন। সামনে কয়েকজন ছন্নছাড়া বেকার যুবক কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ,গাড়ির চালক সে দিক দিয়ে যেতে চাইলেন না। কারণ, তাদের সামনে গেলেই তারা গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে। কিন্তু ওদিক দিয়ে গেলে কবির শর্টকাট হয় বলে, তিনি ড্রাইভারকে জোর করে নিয়ে গেলেন। তাদের সামনে হাজির হতে জিজ্ঞাসা করলেন, তাদের ট্যাক্সি লাগবে কি না। সঙ্গে সঙ্গে তারা আনন্দের সঙ্গে চিৎকার করে বলে ওঠে পেয়ে গেছি। তাদের গন্তব্যস্থল এর কথা জানতে চাইলে, তারা জানায় বেশি দূরে নয়- কাছেই। এরপর তারা সামনে জমে থাকা মানুষের ভিড় দেখিয়ে বলে এক অসহায় বেওয়ারিশ ভিখিরিকে চাপা দিয়ে একটি গাড়ি উধাও হয়ে গিয়েছে। এই বলে তারা সেই রক্তে-মাংসে দলা পাকিয়ে যাওয়া ভিখিরিটিকে পাঁজাকোলা করে ট্যাক্সিতে তুলতে তুলতে সমস্বরে চেঁচিয়ে বলে ওঠে “প্রাণ আছে, প্রাণ আছে”। কবি রক্তের দাগ থেকে নিজের ভদ্রতা ও শালীনতা কে রক্ষা করতে গিয়ে কবি গাড়ি থেকে নেমে গেলেন।

৩.২ গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে
গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া-‘
একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে বলেও কেন পরের পঙক্তিতে ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলা হয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাছটিকে দেখে কবির প্রথমে গাছ বলে মনে হলেও পরবর্তীকালে তাঁর মনে হয়েছে, সেটি গাছের প্রেতচ্ছায়া। কারণ, এদিকে-ওদিকে বাঁকানো কতকগুলি শুষ্ক কাঠির কঙ্কালের মতো তার ডালপালা শূন্যের দিকে তোলা ছিল। সেগুলি এতটাই রুক্ষ-রিক্ত-জীর্ণ যে, তার শরীরের কোথাও কোন লতাপাতা, ছাল-বাকলের চিহ্ন নেই। নেই কোথাও এক বিন্দু সবুজের প্রতিশ্রুতি বা আভাস এবং সামান্যতম রসের সম্ভাবনা। তাই গাছটিকে কবি ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলেছেন।

৩.৩ ‘ওই পথ দিয়ে /জরুরী দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। এভাবে কবিতায় উত্তম পুরুষের রীতি কিভাবে ব্যবহৃত হয়েছে অন্তত পাঁচটি উদ্ধৃত করে বুঝিয়ে দাও ।


উত্তর: আলোচ্য কবিতাটিতে বেশ কয়েকটি চরণে উত্তম পুরুষের রীতি ব্যবহার করা হয়েছে।
যেমন- (১) “ওই পথ দিয়ে জরুরী কাজে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে”,
(২) “জিজ্ঞেস করলুম, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে?”
(৩) “ওখান দিয়েই আমার শর্টকাট”,
(৪) “ফিরে আসতেই দেখি”,
(৫) “অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে দেখলুম”

৩.৪ ‘কারা ওরা?’- কবিতা অনুসরণে ওদের পরিচয় দাও।


উত্তর: ওরা বলতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়া একদল ছন্নছাড়া যুবকের কথা বলা হয়েছে। ওরা হচ্ছে, এক বিরাট নৈরাজ্যের অধিবাসী। ওদের বাস্তুভিটে রীতি-নীতি, আইন-কানুন, বিনয়-ভদ্রতা, শ্লীলতা-শালীনতা কিছুই নেই। ওদের জন্য কলেজে সিট নেই, অফিসে চাকরি নেই, কারখানায় কাজ নেই, ট্রামে-বাসে বসার জায়গা নেই, হাসপাতালে শয্যা নেই। এমনকি তাদের জন্য খেলার মাঠে স্থান নেই, অনুসরণ করার মতো যোগ্য নেতা নেই, কর্মে প্রেরণা সৃষ্টিকারী ভালোবাসাও নেই। আপনজনের সম্ভাষণে সহানুভূতি নেই। ওরা একদল ছন্নছাড়া, বেকার যুবক। ওরা পরোপকারী কিন্তু, যাদের কেউ নেই, কিছু নেই- ওরা তাদের কথা ভাবে। তাদের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে। আসলে ওরা হলো আমাদের দেশের লক্ষ কোটি বেকার যুবক সম্প্রদায়।

৩.৫ ‘ঘেঁষবেন না ওদের কাছে। এই সাবধানবাণী কে উচ্চারণ করেছেন ? ‘ওদের’ বলতে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে ? ওদের কাছে না–ঘেঁষার পরামর্শ দেওয়া হল কেন ?

উত্তর: উদ্ধৃত সাবধান বাণীটি উচ্চারণ করেছেন গাড়ির অর্থাৎ, ট্যাক্সির চালক।
ওদের বলতে তথাকথিত ভদ্র সমাজ থেকে বহির্ভূত রাজ্যের বাসিন্দা একদল ছন্নছাড়া বেকার যুবকদের বোঝানো হয়েছে।
‘ছন্নছাড়া কবিতার ‘ওরা সমাজের নৈরাজ্যের মানুষ। ড্রাইভারের মতে ওদের বাস্তুভিটে রীতি-নীতি, আইন-কানুন, বিনয়-ভদ্রতা, শ্লীলতা-শালীনতা কিছুই নেই। ওরা কেবল অকারণ সময় নষ্ট করে অন্যের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তাই ওদিক দিয়ে গেলে অহেতুক তারা লিফট চাইতে পারে, আর তাতে সেই চাওয়াকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না। তাতে তাদের অকারণ দেরি হবার সম্ভাবনা থাকে। সেকারণেই বক্তা ওদের কাছে না-ঘেঁষার পরামর্শ দিয়েছেন।

৩.৬ ‘তাই এখন এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে।’ —এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের জীবনের এমন পরিণতির কারণ কবিতায় কীভাবে ধরা পড়েছে তা নির্দেশ করো।

উত্তর: এখানে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়া চোঙা প্যান্ট পরিহিত রুক্ষ মেজাজ ও ভাগ্যপিড়ীত একদল ছন্ন ছাড়া বেকার যুবকদের কথা বলা হয়েছে।
তাদের জীবনে এমন পরিস্থিতির কারণ হল সমাজে সৃষ্টি হওয়া অরাজকতা ও বেকারত্ব যা শিক্ষিত যুবকদের বেকারত্বের অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে । ওদের জন্য কলেজে সিট নেই, অফিসে চাকরি নেই, কারখানায় কাজ নেই, ট্রামেবাসে বসার জায়গা নেই। এক কথায় ভদ্রসমাজের কোন সুযোগ-সুবিধাই নেই। টাকা ও ক্ষমতার অভাবে মেলায় বা খেলায় টিকিট নেই, হাসপাতালে শয্যা নেই, খেলার জন্য মাঠ নেই, উদ্দীপিত করার মতো যোগ্য নেতা নেই। ওদের প্রতি কারও কোনো সহানুভূতি নেই। তাই, এক মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে অপ্রয়োজনীয় রোয়াক ছিল তাদের আড্ডা দেওয়ার জায়গা। তাও চলে যাওয়ায় তারা অবশেষে সড়কের মাঝখানে এসে দাঁড়িয়েছে।

৩.৭ ‘জিজ্ঞেস করলুম, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে?’ প্রশ্নবাক্যটিতে প্রশ্নকর্তার কোন অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে ? তাঁর এই প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়ার পর কীরূপ পরিস্থিতি তৈরি হল ?

উত্তর: আলোচ্য প্রশ্নবাক্যটিতে প্রশ্নকর্তার সহানুভূতিশীল দরদি মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে। বেকার, ছন্নছাড়া যুবকদের প্রতি সহানুভুতি প্রকাশের জন্যই তিনি প্রস্তাবটি করেছিলেন।
প্রশ্নকর্তা প্রশ্নটি করা মাত্রই সেই ছন্নছাড়া বেকার যুবকগুলি একসঙ্গে উৎসাহে চিৎকার করে ওঠে “পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি” বলে। সঙ্গে সঙ্গে তিন তিনটি যুবক উঠে পড়ে ট্যাক্সিতে। সামনের ভিড় দেখিয়ে একজন বলে, ভিড়টি কোনো জলসা চিত্রতারকার জন্য নয়। একটি গাড়ি এক বেওয়ারিশ ভিখিরিকে চাপা দিয়ে চলে গিয়েছে। তাদের কয়েকজন গাড়িটিকে ধাওয়া করেছে আর তারা ফাঁকা ট্যাক্সি খুঁজছিল। ভিড়ের কাছে যাওয়াতে রাস্তার মাঝখানে রক্তে-মাংসে দলা পাকানো ভিখিরির শরীরটিকে তারা পাঁজাকোলা করে তুলে নেয় ট্যাক্সিতে। তারপর প্রশ্নকর্তা অর্থাৎ, কবিতার কথক রক্তের দাগ থেকে নিজের ভব্যতা ও শালীনতাকে রক্ষা করার জন্য গাড়ি থেকে নেমে যান।ট্যাক্সিতে তোলার সময় তারা বুঝতে পারে যে ভিখিরিটি এখনও বেঁচে আছে, তখন তারা উল্লাসে চেঁচিয়ে উঠে তার বেঁচে থাকার দাবিকে সমর্থন জানায় ও ট্যাক্সিকে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যেতে বলে।

৩.৮ প্রাণ আছে, এখনও প্রাণ আছে। এই দুর্মর আশাবাদের ‘তপ্ত শঙ্খধ্বনি’ কবিতায় কীভাবে বিঘোষিত হয়েছে তা আলোচনা করো।

উত্তর: একটি বেওয়ারিশ ভিখিরি গাড়ি চাপা পড়ায় একদল ছন্নছাড়া বেকার যুবক ফাঁকা ট্যাক্সি খুঁজছিল এবং সেটি পেয়ে যাওয়ায় গাড়িটিকে নিয়ে তাড়াতাড়ি তারা ঘটনাস্থলে যায়। রক্তে-মাংসে দলা পাকিয়ে যাওয়া ভিখিরির শরীরটিকে তারা পাঁজাকোলা করে তুলে নেয় ট্যাক্সিতে। শরীরটি তোলার সময়ই তারা আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে চেঁচিয়ে ওঠে—শরীরটিতে এখনও প্রাণ আছে বুঝতে পেরে। এইভাবেই শহরের ইট-কাঠ পাথরে পরিবেষ্টিত দয়া-মায়াহীন পরিবেশের মধ্যে থেকে একটি মায়া-মমতাপূর্ণ বিশ্বাসের জয় শঙ্খধ্বনি ধ্বনিত হয়ে উঠে—“প্রাণ আছে, প্রাণ আছে” কথাগুলির মাধ্যমে। কারণ, প্রাণ থাকলেই মর্যাদা থাকে এবং সমস্ত বাধা প্রতিবন্ধকতার বাইরেও থাকে অস্তিত্বের অধিকার। এখানে মৃতপ্রায় ভিখারি যেন মরতে বসা সমাজের রুপক, কিন্তু এই সর্বহারা ছন্নছাড়া যুবকদের মানবিকতার ছোঁয়ায় তাতে প্রান ফিরে এসেছে।

৩.৯ কবিতায় নিজের ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে চাওয়া মানুষটির ছন্নছাড়া‘-দের প্রতি যে অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে তা বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: কবিতায় নিজের ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে চাওয়া মানুষটি হলেন কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ।
কবি গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একদল বেকার ছেলেদের প্রতি সহানুভুতি প্রকাশের উদ্দ্যেশে তাদের কাছে গিয়ে কবি জিজ্ঞাসা করেন তাদের ট্যাক্সি লাগবে কি না। কবি হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন তাদের দুর্দশাকে। যদিও পরবর্তীকালে তাদের পরোপকারী সুলভ মানসিকতা দেখে তিনি তফাতে সরে গিয়েছেন কারন তাদের মতো সবটুকু দিয়ে নিজের ভদ্রতা বিসর্জন দেবার মতো ক্ষমতা তার ছিল না । তবু এই কর্কশ-নীরস ইট-কাঠপাথর পরিবেষ্টিত পরিবেশের মধ্যেও তার এই আচরণ আসলে ‘ছন্নছাড়া’ বলে পরিচিতদের প্রতি কবির আন্তরিক সহানুভূতিপূর্ণ অনুভূতির প্রকাশ।

৩.১০ কবিতায় ‘গাছটি কীভাবে প্রাণের প্রতীক হয়ে উঠেছে তা আলোচনা কর।

উত্তর: আলোচ্য কবিতায় গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাছকে দেখে কবির মনে হয়েছিল, সেটি গাছের প্রেতচ্ছায়া। কারণ, আঁকা-বাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কালের মতো গাছটির ডাল-পালাগুলি শূন্যে তোলা ছিল। আহত ভিখারি যেভাবে রক্তে-মাংসে দলা পাকিয়ে পড়েছিল তাতে তার শরীরে প্রাণের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় ছিল। তা ছাড়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়া ছন্নছাড়া যুবকদের দেখেও বোঝার উপায় ছিল না তাদের মধ্যেও দয়া-মায়া এবং পরোপকারী সুলভ মন লুকিয়ে আছে। অর্থাৎ গাছটি যেন এই মৃতপ্রায় সমাজের প্রতীক। পরে দেখা গেল সেই বেকার যুবকদল কোনো প্রত্যাশা না রেখে, সমজের অবহেলিত দলাপাকানো ভিখারিকে নিয়ে হাসপাতালের ছুটেছিল। তাদের এই মানবিক কাজ যেন এই ক্ষয়িষ্ণু সমাজে প্রান ফিরিয়ে আনল। তাই কবি যখন ফিরছেন, তখন তিনি দেখতে পান—গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা কঙ্কালসার গাছটির মধ্যেও কচি-কচি পাতার চিহ্ন দেখা দিয়েছে। প্রানের লক্ষন ফুটে উঠেছে তাতে। এভাবেই গাছটি প্রাণের প্রতীক হয়ে উঠেছে কবিতায়।

৩.১১ ‘এক ক্ষয়হীন আশা। এক মৃত্যুহীন মর্যাদা।‘—প্রাণকে কবির এমন অভিধায় অভিহিত করার সংগত কারণ নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: ‘ছন্নছাড়া কবিতায় কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রাণকে দুটি বিশ্লেষণ বিশেষায়িত করেছেন। প্রথমত, এক ক্ষয় হিন্ আশা- যে আশা বা আকাঙ্ক্ষার কখনো হয় ক্ষয় হয় না বা সমাপ্তি হয়না। দ্বিতীয়ত, এক মৃত্যুহীন মর্যাদা- অর্থাৎ, যে মর্যাদার কোনো বিনাশ নেই। কবিতায় এই দুটি বিষয়কে বোঝাতে গিয়ে , কবি একটি কঙ্কালসার গাছ এবং ছন্নছাড়া বেকার যুবকদের অবলম্বন করেছেন। কঙ্কালসার গাছটিকে দেখে কবির মনে হয়েছিল, তাতে প্রাণের কোন চিহ্ন নেই। কিন্তু তার পরেই তাতে হাজার হাজার সোনালি কচিপাতা দেখা দিয়েছে। ফুলে ফুলে ভরে গিয়েছে গাছ। তেমনি ছন্নছাড়া বেকার যুবকদের দেখেও বোঝার উপায় ছিল না যে, তাদের মধ্যে পরোপকারী মন- মানসিকতা লুকিয়ে আছে। সুতরাং, ক্ষয় হিন্ আশা ও মৃত্যুহীন মর্যাদা অভিধা দুটি কে আলোচ্য কবিতায় প্রাণের ওপর আরোপ করা যথাযথ হয়েছে বলে আমার মনে হয়।

৪. নীচের প্রতিটি শব্দের দল বিভাজন করে দেখাও : এলোমেলো, ছন্নছাড়া, নৈরাজ্যে, বাসিন্দে, শালীনতা, আত্মীয়তা, শঙ্খধ্বনি, পত্রপুঞ্জে।

উত্তর:
এলোমেলো = এ -লো – মে – লো (মুক্তদল—এ, লো, মে, লো (৪টি), রুদ্ধদল—শূন্য]।
ছন্নছাড়া = ছন্ – ন – ছা – ড়া (মুক্তদল-ন, ছা, ড়া (৩টি), রুদ্ধদল-ছন্ (১টি)] ।
নৈরাজ্যে = নৈ – রাজ্ – জে [মুকদল — নৈ, জে (২ টি), রুদ্ধদল -রাজ্ (১টি)]।
বাসিন্দে = বা – সিন্ – দে [মুক্তদল-বা, দে (২ টি), রুদ্ধদল-সিন (১টি)]।
শালীনতা = শা- লী – ন – তা [মুক্তদল– শা, লী, ন, তা (৪টি), রুদ্ধদল—শূন্য] ।
আত্মীয়তা = আত্ – তী – য় – তা (মুক্তদল—তী, য়, তা (৩টি), রুদ্ধদল—আত (১টি)] ।

শঙ্খধ্বনি = শঙ্ – খ- ধ্ব – নি (মুক্তদল—খ, ধ্ব, নি (৩টি), রুদ্ধদল—শঙ্ (১টি)]।
পত্রপুঞ্জে = পত্ -ত্র -পুন্- জে (মুক্তদল -ত্র , জে (২ টি), রুদ্ধদল – পত, পুন্ (২ টি)]।

৫. নীচের প্রতিটি শব্দের ব্যুৎপত্তি নির্ণয় কর: বর্তমান, ভদ্রতা, সম্ভাষণ, গতি, ভিখিরি, ভব্যতা, রুষ্ট, জিজ্ঞেস, পিছে।

উত্তর:
বর্তমান =বৃৎ + শানচ (মান)।
ভদ্রতা =ভদ্র + তা।
সম্ভাষণ = সম্ – ভাস্ + অনট।
গতি =গম্+ক্তি।
ভিখিরি = ভিখ + আরি (ইরি)।
ভব্যতা = ভূ + য (র্তৃ)+ তা।
রুষ্ট = রুষ্ + ত (র্তৃ )।
জিজ্ঞেস = জ্ঞা-সন্ + এ + অ ।
পিছে = পিছ্ + এ ।

৬. নীচের শব্দগুলিতে ধ্বনি পরিবর্তনের কোন্ কোন্ নিয়ম কাজ করেছে তা দেখাও : জুতো, বাসিন্দে, ক্ষেত, চোখ, কদ্দুর , ভিখিরি।

উত্তর:
জুতো = জুতা > জুতো (স্বরসংগতি)।
বাসিন্দে = বাসিন্দা > বাসিন্দে (স্বরসংগতি)।
ক্ষেত = ক্ষেত্র > ক্ষেত (ধ্বনিলোপ)।
চোখ = চক্ষু > চোখ (সমীভবন)।
কদ্দুর =কত দূর >কদ্দুর (পরাগত সমীভবন)।
ভিখিরি = ভিখারি > ভিখিরি (স্বরসংগতি)।

৭. নিম্নলিখিত পদগুলির ব্যাসবাক্য–সহ সমাসের নাম লেখো : প্রেতচ্ছায়া, ছাল–বাকল, ক্ষুধাহরণ, সোল্লাসে, স্নেহার্দ, শঙ্খধ্বনি।

উত্তর:
প্রেতচ্ছায়া = প্রেতের ছায়া। (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)
ছাল-বাকল = ছাল ও বাকল। (সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস)
ক্ষুধাহরণ = ক্ষুধাকে হরণ। (কর্ম তৎপুরুষ সমাস)
সোল্লাসে = উল্লাসের সহিত বর্তমান। (সহাৰ্থক বহুব্রীহি সমাস)
স্নেহার্দ = স্নেহ দ্বারা আর্দ্র। (করণ তৎপুরুষ সমাস)
শঙ্খধ্বনি = শঙ্খের ধ্বনি। (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)

৮. কোন শব্দে কী উপসর্গ আছে আলাদা করে দেখাও : প্রতিশ্রুতি, বেওয়ারিশ, অনুসরণ, প্রচ্ছন্ন, অভ্যর্থনা, অধিকার।

উত্তর:
প্রতিশ্রুতি = প্রতি-উপসর্গ।
বেওয়ারিশ = বে-উপসর্গ (বিদেশি উপসর্গ)।
অনুসরণ = অনু-উপসর্গ।
প্রচ্ছন্ন প্র-উপসর্গ।

অভ্যর্থনা = অভি-উপসর্গ।
অধিকার = অধি-উপসর্গ।

৯ নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো:

৯.১ ওই পথ দিয়ে জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। (জটিল বাক্যে)
উত্তর: ওই যে পথ সেখান দিয়ে জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।

৯.২ দেখছেন না ছন্নছাড়া কটা বেকার ছোকরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর: দেখছেন না ছন্নছাড়া কটা বেকার যুবক রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে এবং আড্ডা দিচ্ছে।

৯.৩ কারা ওরা ? (প্রশ্ন পরিহার করো)
উত্তর: ওদের পরিচয় জানতে চাইছি।

৯.৪ ঘেষবেন না ওদের কাছে। (ইতিবাচক বাক্য)
উত্তর: ওদের কাছে ঘেঁষা থেকে বিরত থাকুন।

৯.৫ একটা স্ফুলিঙ্গ-হীন ভিজে বারুদের স্থূপ। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর: একটা স্ফুলিঙ্গ-হীন ভিজে বারুদের স্কুপ ছাড়া আর কিছুই নয়।

৯.৬ জিজ্ঞেস করলুম, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে ? (পরোক্ষ উক্তিতে)
উত্তর: তাদের ট্যাক্সি লাগবে কি না জিজ্ঞাসা করা হল।

৯.৭ আমরা খালি ট্যাক্সি খুঁজছি।(জটিল বাক্যে)
উত্তর: আমরা এমন ট্যাক্সি খুঁজছি যা খালি।

৯.৮ দেখতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠেছে ফুল। (ক্রিয়ার কাল নির্দেশ কর)
উত্তর: পুরাঘটিত বর্তমান কাল।

👉 অষ্টম শ্রেণী বাংলা পাঠ্যপুস্তকের সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নগুলির উত্তর: Click Here

এছাড়াও দেখুন: পল্লীসমাজ

You may also like: Class-8 Unit Test Question Papers


দাঁড়াও প্রশ্ন উত্তর mcq
Darao Kobita Class 8 Question Answer

Class-8 Bengali Important Question Answer

Class-8 Bengali Channachara Question Answer

Official Website: Click Here

অষ্টম শ্রেণীর প্রথম ইউনিট টেস্টের বাংলা বিষয়ের প্রশ্নপত্র

Class-8 Bengali Channachara Question Answer

Leave a Comment

CLOSE