HS-Education কোঠারি কমিশনের সুপারিশ

প্রশ্ন: কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো ও পাঠক্রম সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর: কোঠারি কমিশন দেশের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বহুমুখী সুপারিশ করে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থিতি শিক্ষার উপযুক্ত মান রক্ষা, মেধাবী ও প্রতিভাবান ছাত্র ছাত্রীদের খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে কমিশন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার কাঠামো ও পাঠক্রম সম্পর্কে যে সুপারিশ গুলি করেছে সেগুলি হল-

মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো: কমিশনের মতে এই শিক্ষা হবে চার বছরের । এক্ষেত্রে কমিশন দুটি সূত্রের সুপারিশ করে । যথা- (i) নিম্ন মাধ্যমিক (ii) উচ্চমাধ্যমিক স্তর।

(i) নিম্ন মাধ্যমিক স্তর:
প্রথমে দুই বা তিন বছরের শিক্ষাকে বলা হয়েছে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়। এই পর্যায় দশম শ্রেণী পর্যন্ত। ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়স স্তর এই শিক্ষার পর্যায়ে থাকে।

(ii) উচ্চ মাধ্যমিক স্তর:
দ্বিতীয় পর্যায় দুই বছরের। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী। ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সের স্তর উচ্চমাধ্যমিক স্তর নামে পরিচিত।
কমিশনে আরো বলা হয় নিম্ন মাধ্যমিক এরপর একটি বহিঃ পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েই শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।
আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে নবম ও দশম শ্রেণীকে অর্থাৎ নিম্ন মাধ্যমিক স্তরকে মাধ্যমিক শিক্ষা বলে গণ্য করা হয়। আর অন্যদিকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বলে অভিহিত করা হয়।

মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম:

(i) নিম্ন মাধ্যমিক স্তর: অষ্টম, নবম, দশম শ্রেণী

(১) ভাষা: এই স্তরে ত্রিভাষা সূত্রের কথা বলা হয়েছে। (i) মাতৃভাষা বা স্থানীয় ভাষা (ii) হিন্দি বা ইংরেজি (iii) অতিরিক্ত যে কোন একটি প্রাচীন বা আধুনিক ভাষা।

(২) গণিত: গণিতের মধ্যে রয়েছে পাটিগণিত, জ্যামিতি, বীজগণিত ক্যালকুলাস, স্থানাঙ্ক জ্যামিতি ইত্যাদি বিষয়।

(৩) বিজ্ঞান: বিজ্ঞানের পাঠক্রমের বিষয় বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে হবে। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ভূবিজ্ঞান এর অন্তর্ভুক্ত হবে।

(৪) সমাজবিজ্ঞান: ইতিহাস, ভূগোল, পৌরবিজ্ঞান এর অন্তর্ভুক্ত হবে। বর্তমানে সমস্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিষয়গুলিকে পড়াতে হবে।

(৫) চারুকলা: পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত হবে সৃজন মূলক ও উৎপাদন মূলক কাজ, ভাস্কর্য, চিত্রকলা ইত্যাদ।

(৬) কর্মশিক্ষা: বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ যেমন কাঠের জিনিস তৈরি, ধাতুর জিনিস তৈরি, বই বাঁধানো, কার্পেট তৈরি, ইলেকট্রিক্যাল রিপেয়ারিং, সাবান তৈরি, খেলনা প্রস্তুত ইত্যাদি শেখানো। এই কারণে বিভিন্ন উৎপাদনশীল ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা।

(৭) সমাজসেবা: বছরে নির্দিষ্ট সময় সমাজসেবামূলক কাজ করতে হবে। বছরে বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজের জন্য নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৩০ দিন নির্দিষ্ট করতে হবে বছরের মোট দিনের মধ্যে।

(৮) শারীরশিক্ষা: বিভিন্ন গেমস, স্পোর্টস ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখতে হবে স্কুলগুলিতে।

(৯) নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা: সপ্তাহে এক বা দুই পিরিয়ড রাখা দরকার নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার জন্য। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অপর ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব তৈরি হয়।

(ii) উচ্চমাধ্যমিক স্তর: একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী

(১) যেকোনো দুটি ভাষা আধুনিক ভারতীয় ভাষা সমূহের মধ্যে এবং বিদেশী ভাষা সমূহ ও প্রাচীন ভাষাসমূহের মধ্যে যেকোনো দুটি

(২) নিচের বিষয়গুলি থেকে যেকোনো তিনটি Elective বিষয় হিসেবে বেছে নিতে হবে।
i) একটি অতিরিক্ত ভাষা
ii) ভূগোল
iii) অর্থনীতি
iv) ইতিহাস
v) তর্কবিদ্যা
vi) মনোবিজ্ঞান
vii) চারুকলা
viii) রসায়ন
ix) ভূতত্ত্ব
x) গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
xi)গণিত।

(৩) কর্মশিক্ষা ও সমাজসেবা

(৪) শারীর শিক্ষা

(৫) চারুকলা ও হস্তশিল্প

(৬) নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা।

এই সমস্ত বিষয়গুলি ছাড়াও কমিশনের আরো কয়েকটি সুপারিশ হল-
(১) ছেলে বা মেয়েদের জন্য আলাদা কোন পাঠ্যক্রম থাকবে না, মেয়েদের জন্য গার্হস্থ্য বিজ্ঞান আবশ্যিক হবে না।
(২) মেয়েদের অধিকাংশের জন্য গান, নাচ চারুকলার ব্যবস্থা থাকবে তাদেরকে গণিত ও বিজ্ঞান পড়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে হবে।

➤ সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্ন দেখার জন্য: Click Here

➤ HS English Notes: Click Here

👉 WB Class 11 English All Notes: Click Here

➤ Subscribe our YouTube channel: Click Here

➤ Join our Facebook page: TextbookPlus

West Bengal Higher Secondary Board

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়: শিখন কৌশল HS-Education কোঠারি কমিশনের সুপারিশ

উচ্চ মাধ্যমিক এডুকেশন – দ্বিতীয় অধ্যায় শিখন কৌশল
কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো ও পাঠক্রম সম্পর্কে আলোচনা করো।