Class-8 Bengali Question Answer দাঁড়াও

Class-8 Bengali Question Answer দাঁড়াও

এখানে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের ‘দাঁড়াও‘ গদ্যের প্রশ্নগুলির উত্তর আলোচনা করা হলো। আশাকরি এইগুলি ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়ক হবে।

শ্রেণী: অষ্টম বিষয়: বাংলা
দাঁড়াও
শক্তি চট্টোপাধ্যায়
পাঠ্য পুস্তকের প্রশ্নগুলির উত্তর:

১.১ শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর: শক্তি চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণ চবিশ পরগনার বহরু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

১.২ তার লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখ।
উত্তর: তার লেখা একটি উপন্যাসের নাম হল- “অবনী বাড়ি আছো?”

২. নিচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:

২.১ মতো শব্দ ব্যবহার করা হয় কখন? তোমার যুক্তির পক্ষে দুটি উদাহরণ দাও।

উত্তর: একটি বিষয়ের সঙ্গে আর একটি বিষয়ের তুলনা বা সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য বোঝাতে মতো শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
► উদাহরণ- শিশুর হাসি ফুলের মতো স্নিগ্ধ।
চোখটা রক্তের মতো লাল।

২.২ কবি পাখির মত পাশে দাঁড়াতে বলেছেন কেন?

উত্তর: কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ‘দাঁড়াও’ কবিতায় বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতাকে পরিত্যাগ করে মানুষকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। পাখির উড়ে চলা ও তার আচরণে রয়েছে স্বাধীনতা, গতিবেগ ও চঞ্চলতা। পাখিদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা বা বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব নেই। নেই সামাজিক জটিলতার স্পর্শ। তাই কবি পাখির মত মানুষকে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে বলেছেন।

২.৩ “মানুষই ফাঁদ পাতছে” – কবি এ কথা কেন বলেছেন? মানুষ শব্দের সঙ্গে ই ধ্বনি যোগ করেছেন কেন- তোমার কি মনে হয়?

উত্তর: সমাজ সচেতন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় উপলব্ধি করেছেন সমাজের জটিল আবর্তে পড়ে মানুষের মধ্যে থেকে মনুষ্যত্ববোধ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। মানুষের হিংসা, লোভ, লালসার হাত থেকে মানুষ বাঁচতে পারে না। একে অপরকে আক্রমণ করার জন্য, ঠকাবার জন্য মানুষ যেন জাল পেতে আছে। তাই কবি এমন মন্তব্য করেছেন।
► মানুষের মধ্যে দয়া মায়া ,ভদ্রতা নম্রতা, পারস্পরিক সহানুভূতি ইত্যাদির প্রকাশ যেমন লক্ষ্য করা যায় তেমনি আবার এই মানুষই মানুষকে ঠকাই , শোষণ করে, খুন করে। মানুষের প্রতি মানুষের বর্বরতা কথা জোর দিয়ে বোঝাতেই কবি ই ধ্বনিটি যোগ করেছেন।

২.৪ তোমার মতো মনে পড়ছে- এই পঙক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থ কি?

উত্তর: আলোচ্য পঙক্তিটিতে “তোমার” বলতে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বোঝানো হয়নি, সমাজের সমস্ত শুভবোধ, মানবিকতাকে বোঝানো হয়েছে। অবক্ষয়ী সমাজে মানুষ বড় অসহায় এবং একলা হয়ে পড়েছে। মানুষের ওপর শোষণ-পীড়ন চালাচ্ছে আরেকদল মানুষ। মানুষ ক্রমশ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। অথচ, এই মানুষেরই মধ্যেই আছে বহু সদ গুণের সমাবেশ। তাই কবি বলেছেন, তোমার মতো মনে পড়ছে। অর্থাৎ, মানুষের মধ্যে যে সমস্ত সদ্গুণগুলি আছে- সেই গুনগুলির ই বহিঃপ্রকাশ কামনা করছেন কবি।

২.৫ এসে দাড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালোবেসে দাঁড়াও- এই পঙক্তিটির বিশেষত্ব কোথায়? এই ধরনের দুটি বাক্য তুমি তৈরি করো।

উত্তর: আলোচ্য পঙক্তিটির বিশেষত্ব নানা ভাবে লক্ষণীয়। প্রথমত, এসে, ভেসে, বেসে – তিনটি অসমাপিকা ক্রিয়াপদ। সম্পূর্ণ বাক্যটি তিনটি অসমাপিকা ক্রিয়া পদ দ্বারা গঠিত। দ্বিতীয়তঃ, শব্দ গুলির মধ্যে একটি ছন্দ কত মিল লক্ষ্য করা যায়। পরপর দুই মাত্রার শব্দ বসিয়ে আলাদা ধ্বনি ঝংকার সৃষ্টি করা যায়। তৃতীয়তঃ, এ- কার- সহ স অক্ষরটি তিনবার বৃত্তানুপ্রাস অলংকার সৃষ্টি করেছে।
► এই ধরনের দুটি বাক্য:
(i) সবুজ ঘাসের শেষে আকাশ গিয়ে মেশে আমি তারে ভালোবেসে ছুটে যাই।
(ii) রং আছে, তুলি আছে, আর আছে খাতা বেশ।

৩. ‘মানুষ বড় কাঁদছে’- কী কারণে কবি এই কথা বলেছেন?

উত্তর: বাস্তববাদী কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় জীবন কে দেখেছেন কঠিন বাস্তবের মাটি থেকে। সমাজের জটিল আবর্তে পড়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। সমগ্র পৃথিবী জুড়েই চলছে ক্ষমতার রাজনীতি। দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধ, ঠান্ডা লড়াই ,বিচ্ছিন্নতাবাদ, উগ্রপন্থী মানসিকতা মানুষকে কাঠ গড়ায় দাঁড় করিয়েছে। মানুষেরা মেতে উঠেছে অত্যাচার ও উৎপীড়নের খেলায়। সমাজে মুষ্টিমেয় স্বার্থপর লোকের জন্য হতদরিদ্র, অসহায় মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। এই সমস্ত মানুষদের জন্য কবি খুবই মর্মাহত হয়েছেন। তাই তিনি উক্ত কথাটি বলেছেন।

৪. ‘মানুষ বড় একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও’- এই পঙক্তিটি কে তিনবার ব্যবহার করার কারণ কী হতে পারে বলে তোমার মনে হয়?

উত্তর: বাস্তববাদী কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় আলোচ্য পঙক্তিটির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন যে মানুষ বড়ো অসহায়, একলা। সমাজে স্বার্থপর, অমানবিক ব্যক্তির লালসার শিকার ও নিপীড়িত সাধারণ মানুষ। মানুষের অসহায়ত্ব ও একাকিত্ব কেবল মানুষের দ্বারাই নিরাময় সম্ভব। এজন্য তিনি মানুষকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তাই আলোচ্য পঙক্তিটিকে তিনটি অনুচ্ছেদে তিনবার ব্যবহার করে কবি তার বক্তব্যকে খুব জোরালো, স্পষ্টতর ও প্রবল করার চেষ্টা করেছেন।

৫. কবিতাটির নাম ‘দাঁড়াও’ কতটা সার্থক? কবিতাটির নাম মানুষ বড় কাঁদছে হতে পারে কি- তোমার উত্তরের ক্ষেত্রে যুক্তি দাও।

উত্তর: কবিতাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর কবিতায় অসহায়, দরিদ্র, বিপদগ্রস্ত, একাকী মানুষের পাশে শুভবোধ সম্পন্ন মানুষদেরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বলেছেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। তাই কবিতার নাম “দাঁড়াও” পুরোপুরি সার্থক।
কবিতাটির নাম মানুষ বড় কাঁদছেও হতে পারত নিঃসন্দেহে। কারণ, কবিতার বিষয়বস্তুর সঙ্গে এই নামটির পুরো মাত্রায় সঙ্গতি আছে। তবুও তুলনামূলক বিচারে মানুষ বড় কাঁদছে নামটির চেয়ে দাঁড়াও নামটি বেশি সংগত।

৬. কবি কাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করেছেন বলে তোমার মনে হয়?

উত্তর: প্রদত্ত কবিতাটিতে কবি মানুষকেই মনুষ্যত্ববোধ, শুভ চেতনা ইত্যাদি সদগুন গুলির জাগরনের মধ্যে দিয়ে- মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে অনুরোধ করেছেন। সমাজে বেঁচে থাকতে হলে আমাদের একে অপরের পরিপূরক হতে হবে, একে অপরকে সাহায্য করতে হবে। এই বোধহয় পারে মানসিক তথা বর্বর আচরণ থেকে মুক্ত করতে। বর্তমান সময়ে কিছু মানুষ হিংসায় মত্ত হয়ে মানুষের উপর অত্যাচার করতে কুণ্ঠিত হয় না। সমাজ থেকে সত্য সুন্দরকে তারা মুছে ফেলতে চাই। তাই কবি বিবেকবান মানুষকে সেই সমস্ত উৎপীড়িত অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

৭. কবিতাটি চলিত বাংলায় লেখা, শুধু একটা শব্দ সাধু ভাষার। শব্দটি খুঁজে বার করো এবং শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করেছেন কেন কবি?

উত্তর: ‘দাঁড়াও’ কবিতাটিতে শুধু একটি মাত্র শব্দ সাধু ভাষায় লেখা, সেটি হলো ‘তাহার’।
তাহার শব্দটি দিয়ে কবি অসহায়, হতদরিদ্র মানুষদের বোঝাতে চেয়েছেন। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় সেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আকুল প্রার্থনা করেছেন। এই অসহায় নির্যাতিত মানুষদের কে চিহ্নিত করতে কবিতার মধ্যে হঠাৎ একটু ব্যতিক্রমী শব্দ ব্যবহার করে কবি তাদের প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সচেষ্ট হয়েছেন। তাছাড়া নিত্য ব্যবহার্য শব্দের বদলে বা তার পাশাপাশি সাধু শব্দ ‘তাহার’ ব্যবহার করে বক্তব্যকে আরো গভীর করে তুলতে চেয়েছেন।

৮. প্রথম স্তবক এর তিনটি পঙক্তির প্রত্যেকটির দলসংখ্যা কত? প্রতিটি পঙক্তি কটি রুদ্ধ দল ও মুক্ত দল নিয়ে তৈরি?

উত্তর: প্রথম চরণ = মানুষ বড় কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও-
মানুষ (মা- নোস), বড় (ব- ড), কাঁদছে (কাদ – ছে), তুমি- (তু – মি), মানুষ (মা- নোস), হয়ে (হ- এ), পাশে (পা- সে), দাঁড়াও (দা- রাও),
দল সংখ্যা- ১৬ টি।
দ্বিতীয় চরণ= মানুষ ফাঁদ পাচ্ছে, তুমি পাখির মত পাশে দাঁড়াও-
মানুষ (মা- নোস ই), ফাঁদ(ফাঁদ), পাতছে (পাত – ছে),
দল সংখ্যা- ১৬ টি।
তৃতীয় চরণ= মানুষ বড় একলা তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও-
মানুষ (মা-নস), বড় (ব- রো ), পাশে (পা- সে),১৬ টি।
প্রথম স্তবক এর তিনটি পঙক্তির প্রত্যেকটির দল সংখ্যা ১৬।
প্রথম পঙক্তি- ১২ একটি মুক্ত দল এবং ৪ টি রুদ্ধদল নিয়ে গঠিত।
দ্বিতীয় পঙক্তি- ১১ টি মুক্ত দল এবং ৫ টি রুদ্ধ দল নিয়ে গঠিত।
তৃতীয় পঙক্তি- ১২ টি মুক্ত দল এবং ৪ টি রুদ্ধ দল নিয়ে গঠিত।

৯. কী ঘটেছে লেখো:

উত্তর:
সন্ধ্যা > সন্ধে (স্বরসঙ্গতি)
ফাদ > ফাঁদ (স্বতোনাসিক্যিভবন)

👉 অষ্টম শ্রেণী বাংলা পাঠ্যপুস্তকের সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নগুলির উত্তর: Click Here

এছাড়াও দেখুন: পল্লীসমাজ

You may also like: Class-8 Unit Test Question Papers


দাঁড়াও প্রশ্ন উত্তর mcq
Darao Kobita Class 8 Question Answer

Class-8 Bengali Important Question Answer

Class-8 Bengali Question-Answer দাঁড়াও

Official Website: Click Here

অষ্টম শ্রেণীর প্রথম ইউনিট টেস্টের বাংলা বিষয়ের প্রশ্নপত্র

Leave a Comment

CLOSE