Class-8 Bengali সুভা প্রশ্ন-উত্তর

Class-8 Bengali সুভা প্রশ্ন-উত্তর

এখানে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের ‘সুভা‘ প্রশ্নগুলির উত্তর আলোচনা করা হলো। আশাকরি এইগুলি ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়ক হবে।

শ্রেণী: অষ্টম বিষয়: বাংলা
সুভা প্রশ্ন উত্তর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পাঠ্য পুস্তকের প্রশ্নগুলির উত্তর:

১.১ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত কোন পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ নিয়মিত লিখতেন?
উত্তর: জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত ভারতী ও বালক পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন।

১.২ ভারতের কোন প্রতিবেশী দেশে তাঁর লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয় ?
উত্তর: ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে তাঁর লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়।

২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :

২.১ সুভার প্রকৃত নাম কী ?
উত্তর: সুভার প্রকৃত নাম সুভাষিণী।

২.২ সুভার বাবা কে ?
উত্তর: সুভার বাবা হলেন চণ্ডীপুর গ্রামের সম্পন্ন গৃহস্থ বাণীকণ্ঠ।

২.৩ সুভা কোন গ্রামে বাস করত ?
উত্তর: সুভা চণ্ডীপুর গ্রামে বাস করত।

২.৪ গল্পে সুভার কোন্ কোন্ বন্ধুর কথা রয়েছে ?
উত্তর: ‘সুভা’ গল্পে সুভার যেসব বন্ধুর কথা আছে, তারা হল- গােয়ালের দুটি গাভি সর্বশী ও পাঙ্গুলি। একটি বিড়ালছানা, ছাগলছানা ও প্রতাপ।

২.৫ কে সুভাকে ‘সু বলে ডাকত ?
উত্তর: গোঁসাইদের ছােটো ছেলে প্রতাপ সুভাকে ‘সু’ বলে ডাকত।

৩. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

৩.১ ‘সে নির্জন দ্বিপ্রহরের মতাে শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন” — সুভা সম্পর্কে এরকম উপমা লেখক ব্যবহার করেছেন কেন ?

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পের মূল চরিত্র সুভা সম্পর্কে প্রশ্নোদ্ধৃত উপমাটি ব্যবহার করা হয়েছে।
গল্প পাঠে জানা যায় সুভা জন্ম থেকেই কথা বলতে পারে না। ভাববিনিময়ের ভাষা ছিল তার বড়ো বড়ো কালো চোখের দৃষ্টি। সেই সঙ্গে তার মুখে ফুটে উঠত নানান অনুভূতি। সুভার মধ্যে প্রকৃতির মতো নির্জনতা ও গভীরতা লক্ষ করেই বালক-বালিকারা তাকে ভয় করত ও কেউ তার সঙ্গী হতে চাইত না। তাই সে ছিল সঙ্গীহীন। আবার নির্জন দুপুর যেমন নিস্তব্ধ সেরকমই সুভা ছিল শব্দহীন। একারণেই লেখক তাকে নির্জন দুপুরের মতো ‘শব্দহীন’ এবং ‘সঙ্গীহীন’ বলেছেন। এই উপমা যেন সুভার প্রকৃতিগত গভীরতা ও নিঃসঙ্গতার দিকটিই স্পষ্ট করে।

৩.২ চণ্ডীপুর গ্রামের বর্ণনা দাও।

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পে সুভার বাবা বাণীকণ্ঠের বাড়ি বাংলাদেশের চন্ডিপুর গ্রামে। গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে সরু নদী। দুই ধারে গ্রামের সকলের সাথেই যার কোনো না কোনো সম্পর্ক আছে। নদীর দুই ধারে লোকালয় ও তরুচ্ছায়াঘন উচ্চতট। নদীর কলধ্বনি, মানুষের কোলাহল, তরুর মর্মর প্রভৃতি যেন গ্রামটিকে সদাচঞ্চল করে রেখেছে।

৩.৩ সুভার সঙ্গে সর্বশী ও পাঙ্গুলির সম্পর্ক কীরকম ছিল ?

উত্তর: ছােটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অপূর্ব সৃষ্টি ‘সুভা’ গল্পে মূক মেয়ে সুভার নিজস্ব পৃথিবী একেবারে নিস্তব্ধ ছিল না। তার অত্যন্ত কাছের অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিল গােয়ালের দুটি গাভি-সর্বশী ও পাঙ্গলি। এই নাম তারা বালিকার মুখে না-শুনলেও চেতনা দিয়ে অনুভব করত। বালিকার পদশব্দ, তার স্নেহ, আদর, শাসন, তার হৃদয়ের ভাব-ভাষা সাধারণ মানুষের। থেকেও তারা ভালাে বুঝত। সুভা প্রতিদিন তাদের কাছে দুই-তিন বার আসত। মা যেমন সন্তানকে স্নেহ করে, তার কঠিন সময়ে তাকে সান্ত্বনা দেয়, তেমনই এই মূক প্রাণীদুটিও সুভার মনখারাপের দিনে তার মর্মবেদনা বুঝে তার কাছে এসে সুভা বাহুতে শিং ঘষতে ঘষতে সুভাকে নির্বাক ব্যাকুলতার সঙ্গে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করত।

৩.৪ এইজন্য প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝিত’ প্রতাপের কাছে সুভা কীভাবে মর্যাদা পেত, তা গল্প অবলম্বনে লেখাে।

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সুভা’ গল্পে চন্ডীপুর গ্রামের গোঁসাইদের অকর্মণ্য ছোটো ছেলে প্রতাপ। ছিপ ফেলে মাছ ধরা যার প্রধান শখ। কারণ, এতে সহজে অনেকটা সময় কাটানো যায়। প্রতাপ সব কাজেই সঙ্গী খুঁজত। তবে মাছ ধরার সময় বাক্যহীন সঙ্গী সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এজন্যই প্রতাপের কাছে সুভার বিশেষ মর্যাদা ছিল। তাই প্রতাপ আদর করে সুভাকে ‘সু’ বলে ডাকত।

৩.৫ ‘তাহাদের জাতি ও পরকাল রক্ষা হইল’ -কাদের সম্পর্কে এ কথা লেখক বলেছেন ? তাঁর এরূপ মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করাে।

উত্তর: ছােটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পের প্রশ্নোধৃত অংশে সুভাষিণী বা সুভার পিতা ও মাতা সম্পর্কে লেখক আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন।
ভারতবর্ষীয় সমাজ পুরুষতান্ত্রিক। নারীরা সেখানে উপেক্ষিত, বঞ্চিত। বহু যুগ আগে থেকে এই সমাজ নানাবিধ কুসংস্কার দ্বারা আচ্ছন্ন। অল্পবয়সে কন্যাকে পাত্রস্থ করার রীতি এখানে প্রচলিত। কোনাে কারণে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা যদি তার কন্যাকে পাত্রস্থ করে দায়িত্বমুক্ত হতে না পারত, তাহলে তার সমাজচ্যুত হওয়ার ভয় থাকত। আলােচ্য গল্পে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা বাণীকণ্ঠ তাঁর মূক মেয়ে সুভাকে যৌবনপ্রাপ্ত অবস্থায়ও বিবাহ দিতে না-পারায় একঘরে হওয়ার ভয়ে ভীত হয়ে কলকাতায় গিয়ে তাকে বিবাহ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। নিজেদের জাতিগত ঐতিহ্য, সমাজকে রক্ষা করতে ও পরকাল সুনিশ্চিত করতে কন্যার অক্ষমতার কথা না-জানিয়ে তাকে এক পাত্রের সঙ্গে তাঁরা বিবাহ দিলেন। কন্যা যে বােবা, তা জানালে হয়তাে সারাজীবন তার বিবাহ দেওয়া সম্ভব হবে না, সেইজন্য তাঁরা সুভার অক্ষমতার কথা পাত্রকে জানালেন না। ফলে বিবাহের কিছুদিন পরে সে চিরতরের জন্য স্বামী ও সংসারসুখ থেকে বঞ্চিত হল। সমাজের এই নির্মম প্রথার যূপকাষ্ঠে হৃদয়হীন পিতা বাণীকণ্ঠ ও তার স্ত্রী তাদের কন্যাসন্তানটিকে বলি দিলেন। বিনিময়ে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও পরকাল রক্ষা পেল।

৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখাে :

৪.১ ‘প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়’—মানুষের ভাষার অভাব কীভাবে প্রকৃতি পূরণ করতে পারে তা আলােচনা করাে।

উত্তর: শব্দের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে প্রকাশ করতে উন্মুখ। নিজেকে ব্যক্ত করার আকাঙ্ক্ষা থেকেই ভাষার উৎপত্তি। কিন্তু প্রতিটি ভাষারই একটি সীমাবদ্ধতা আছে। হৃদয়ের অনুভূতিকে সে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করতে পারে না। কিন্তু প্রকৃতির বহুবিধ রূপ। তাই, যারা বাকযন্ত্রের দুর্বলতার কারণে মূক, প্রকৃতি যেন তাদের হয়ে কথা বলে। আলােচ্য গল্পে সুভার হৃদয়ের আনন্দ, বেদনা, দুঃখ সব কিছুকে প্রকৃতি বিচিত্র সুরে প্রকাশ করে। নদীর কলধ্বনি, মাঝির গান, পাখির ডাক, তরুর মর্মর সমস্ত মিশে চারিদিকের চলাফেরা, আন্দোলন, কম্পনের সঙ্গে এক হয়ে সমুদ্রের তরঙ্গরাশির মতাে বালিকার চিরনিস্তব্ধ হৃদয়তটের কাছে এসে ভেঙে পড়ে। বড়াে বড়াে চক্ষুপল্লববিশিষ্ট সুভার চোখের ভাষা, মুখের ভাব, প্রকৃতির এই বিবিধ শব্দ এবং বিচিত্র গতির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ঝিল্লিরবপূর্ণ পুণ্যভূমি থেকে শব্দাতীত নক্ষত্রলােক পর্যন্ত কেবল ইঙ্গিত, ভঙ্গি, সংগীত, ক্রন্দন এবং দীর্ঘনিশ্বাস আসলে সুভার প্রকৃতিকেই স্মরণ করায়। প্রকৃতি এভাবেই সুভার ভাষার অভাব পূরণ করতে পারে।

৪.২ সুভার সঙ্গে মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্ব কেমন ছিল তা লেখাে।

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুভা আজন্ম বােবা, কথা বলতে অক্ষম। আলােচ্য গল্পে দেখা যায়, সুভার সঙ্গে তাদের গােয়ালের দুটি গাভি-সর্বশী ও পাঙ্গুলির একটি বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সুভার পায়ের শব্দ এই মনুষ্যেতর প্রাণীদুটির অত্যন্ত পরিচিত। সুভার অন্তর্বেদনা তারা ভাষার থেকে ভালাে বুঝত। সুভা কখন তাদের আদর। করছে, ভর্ৎসনা করছে, তা তারা মানুষের চেয়ে বেশি। বুঝত। সে দিনের মধ্যে নিয়মিত তিনবার গােয়ালঘরে যেত, এ ছাড়া তার অনিয়মিত যাতায়াতও ছিল। সুভা গােয়ালে ঢুকে দুই বাহু দিয়ে সর্বশীর গলা জড়িয়ে ধরে নিজের গাল তার কানের কাছে ঘষত এবং পাঙ্গুলি স্নিগ্ধদৃষ্টিতে তার প্রতি নিরীক্ষণ করে তার গা চাটত। সুভা যেদিন বাড়িতে কঠিন কথা শুনত, সেদিন সে অসময়ে তার এই মূক বন্ধু দুটির কাছে আসত। সুভার সহিষ্ণুতা পরিপূর্ণ শান্ত দৃষ্টিপাত থেকে তারা এই বালিকার মর্মবেদনা উপলদ্ধি করে তার বাহুতে শিং ঘষে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করত। কলকাতা যাওয়ার পূর্ব দিনে সে তার এই দুটি বাল্যসখীদের কাছ থেকে বিদায় নিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিল।

এরা ছাড়াও ছাগল এবং বিড়ালশাবকের সঙ্গেও সুভার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তারা সুভার প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য প্রকাশ করত। বিড়ালশিশুটি দিন ও রাত্রে যখন তখন সুভার গরম কোলে এসে ঘুমােত এবং সুভা তার ঘাড় ও পিঠে নরম আঙুল বুলিয়ে তার সুখনিদ্রায় সাহায্য করত। 
৪.৩ শুক্লা দ্বাদশীর রাত্রিতে সুভার মনের অবস্থা কেমন ছিল ? তার মনের অবস্থা এরকম হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পের উদ্ধৃত প্রশ্নাংশে শুক্লাপক্ষের দ্বাদশ রাত্রিতে সুভা অত্যন্ত বিষন্ন ছিল।
কারণ, সুভা জানত বিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হবে। তার প্রিয় গ্রাম, অতি প্রিয় মূক পশুদ্বয় এবং প্রতাপকে ছেড়ে সে অন্য প্রকৃতি ও অপরিচিত মানুষদের মধ্যে থাকতে পারবে । শুক্লা দ্বাদশীর রাত্রিতে চিরদিনের জন্য গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার শঙ্কায়, বিরহব্যথাতুর সুভা শয়নগৃহ থেকে বেরিয়ে তার চিরপরিচিত নদীতটে ঘাসের বিছানায় লুটিয়ে পড়েছিল। যেন সে এই ধরণিকে দু-বাহু দিয়ে তাকে ধরে রাখার জন্য কাতর মিনতি জানাচ্ছে। আসলে এখানে সে দুঃখকষ্ট পেলেও তার পিতার স্নেহ, দুই মূক গাভির অন্তরঙ্গ বন্ধুর ন্যায় আচরণ, প্রতাপের সান্নিধ্য তার সমস্ত দুঃখকে প্রশমিত করে দেয়। কিন্তু এই ভাষাহীন বােবা মেয়েটিকে বাইরের কেউ বুঝবে না বা বুঝতে চাইবে না। তার আবাল্যপরিচিত নদী, নদীতটের সেই তেঁতুলতলা এবং প্রিয় মানুষদের ছেড়ে চলে যাওয়ার দুঃখে সে তাই ব্যথিত ও তার হৃদয় ভারাক্রান্ত ছিল ছিল।

৪.৪ গল্পের একেবারে শেষ বাক্যটি গল্পের ক্ষেত্রে কতখানি প্রয়ােজন আলােচনা করাে।

উত্তর: বহু নারীকে সামাজিক বিধিনিষেধ ও কুসংস্কারের বলি হতে হয়। আজও নির্দয় পিতামাতার উদাসীনতা, নির্বুদ্ধিতা বহু মেয়ের জীবনে অভিশাপ হয়ে নেমে আসে। পাঠ্য গল্পে সুভার পিতা বাণীকণ্ঠ তার মেয়েকে উপযােগী পাত্রের হাতে সমর্পণ করেনি। ফলত, বােবা মেয়ের জীবনটি দুঃখপূর্ণ হয়ে চূড়ান্ত অসহায়তার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। গল্পের শেষ বাক্যটিতে বলা হয়েছে—“এবার তাহার স্বামী চক্ষু এবং কর্ণেন্দ্রিয়ের দ্বারা পরীক্ষা করিয়া এক ভাষাবিশিষ্ট কন্যা বিবাহ করিয়া আনিল।” এর ফলে সুভার চিরনীরব হৃদয়ের মধ্যে অসীম অব্যক্ত ক্রন্দনধারা অবিরাম মৃত্যুর পূর্বদিন পর্যন্ত বয়ে চলবে। তাই মানবদরদি সহৃদয় লেখক গল্পের শেষ বাক্যটির মাধ্যমে বােঝাতে চেয়েছেন। আজও বাংলাদেশের বহু রমণীর জীবনে যে এইভাবে বিপর্যয় নেমে আসে, তা সুভার স্বামীর চক্ষু ও কর্ণেন্দ্রিয়ের দ্বারা পরীক্ষা করে এক ভাষাবিশিষ্ট কন্যাকে বিবাহ করে আনার ঘটনায় প্রমাণিত। সুভা’ গল্পের এই শেষ বাক্যটি মূক, বােবা মেয়ে সুভার অন্তর্বেদনা, দুঃখ এবং ভাগ্যবিপর্যয়কে অনেক বেশি বাস্তবসম্মত করে তুলেছে, যা আমাদের হৃদয়ে সুভার জন্য বেদনার সঞ্চার করে। তাছাড়া, ছােটোগল্পের একটি বৈশিষ্ট্য হল ‘শেষ হয়েও হইল না শেষ’—অর্থাৎ, গল্পের সমাপ্তি ঘটলেও, সেখান থেকে আগামী ঘটনার একটি কল্পিত অনুরণন পাঠকের মনে চলতে থাকবে। সেইজন্য গল্পের শেষােক্ত বাক্যটি প্রাসঙ্গিক এবং কাহিনির বাস্তবায়নে অনেক বেশি প্রয়ােজনীয় ও ব্যঞ্জনাময় হয়েছে বলা যায়।

৪.৫ মানুষ ও মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্ব নিয়ে আরও দু-একটি গল্পের নাম লেখাে এবং ‘সুভা’ গল্পটির সঙ্গে তুলনা করাে।

উত্তর: মানুষ ও মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্ব নিয়ে লিখিত দুটি গল্প হল কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘মহেশ’ ও প্রভাতকুমার মুখােপাধ্যায় রচিত ‘আদরিণী।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহেশ’ এক অনন্য সৃষ্টি। ‘মহেশ’ গল্পে গফুর এক দরিদ্র মুসলমান কৃষক। সে তার পােষ্য মহেশের খাদ্যসংগ্রহের জন্য নিজের ঘরের থালাবাসন পর্যন্ত দোকানে জমা রাখে । তার গৃহে চালের খড় খসে পড়লেও মহেশের খাদ্যের খড় সংগ্রহ করতে না-পারলে খড়ের ঘরের চালের পুরােনাে শুকনাে খড় তাকে খেতে দেয়। আবার গফুর মহেশের জন্য খাদ্যসংগ্রহের ব্যর্থতা নিয়ে যখন তাকে আদর করে বা সমস্ত কিছু জানায়, তখন মহেশ তার শিং নাড়িয়ে, চোখ বুজিয়ে গফুরের সমব্যথী হয়। অনুরূপভাবে, আলােচ্য ‘সুভা’ গল্পেও সুভা তার মূক বন্ধু সর্বশী ও পাঙ্গুলিকে প্রতিনিয়ত তিনবার করে দেখে বা পরিচর্যা করে আসত। সে গােয়ালে ঢুকে সর্বশীর গ্রীবা বেষ্টন করে তার কানের কাছে নিজের গাল ঘর্ষণ করত। সুভার পদশব্দ, তার আদর বা ভৎসনা সবটাই তাদের পরিচিত ছিল। যেদিন সুভা তার বাড়িতে কঠিন কথা শুনত, সেদিন অসময়ে সে এই মূক বন্ধু দুটির কাছে আসত। তারা সুভার বাহুতে শিং ঘষে নির্বাক ব্যাকুলতার সঙ্গে তার মর্মবেদনা, তার দুঃখের সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করত। সুতরাং, ‘মহেশ’ গল্পে মহেশের সঙ্গে গফুরের যে হৃদ্যতার সম্পর্ক, সেইরকম সম্পর্কই আলােচ্য গল্পে সুভার সঙ্গে সর্বশী ও পাগুলির মধ্যে দৃষ্ট হয়।

৫. নীচের বাক্যগুলিকে কর্তা খণ্ড ও ক্রিয়া খণ্ডে ভাগ করে দেখাও :

৫.১ সে নির্জন দ্বিপ্রহরের মতাে শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন।

উত্তর:
কর্তা খণ্ড = সে
ক্রিয়া খণ্ড =নির্জন দ্বিপ্রহরের মতাে শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন।

৫.২ সে যে কাজকর্ম করিয়া সংসারের উন্নতি করিতে যত্ন করিবে, বহু চেষ্টার পর বাপ-মা সে-আশা ত্যাগ করিয়াছেন।

উত্তর:
কর্তা খণ্ড = বাপ-মা।
পরাধীন ক্রিয়া খণ্ড = যে কাজকর্ম করিয়া সংসারের উন্নতি করিতে যত্ন করিবে।
স্বাধীন ক্রিয়া খণ্ড বহু চেষ্টার পর সে আশা ত্যাগ করিয়াছেন।

৫.৩ এতে এই বাক্যহীন মনুষ্যের মধ্যে বৃহৎ প্রকৃতির মতাে একটা বিজন মহত্ত্ব আছে।
উত্তর:
কর্তা খণ্ড = এই বাক্যহীন মনুষ্যের।
ক্রিয়া খণ্ড = বৃহৎ প্রকৃতির মতাে একটা বিজন মহত্ত্ব আছে।

৬. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করাে :

৬.১ সুভা তেঁতুলতলায় বসিয়া থাকিত এবং প্রতাপ অনতিদূরে মাটিতে ছিপ ফেলিয়া জলের দিকে চাহিয়া থাকিত। (জটিল বাক্যে)

উত্তর: যখন সুভা’তেঁতুলতলায় বসিয়া থাকিত তখন প্রতাপ অনতিদূরে মাটিতে ছিপ ফেলিয়া জলের দিকে চাহিয়া থাকিত।

৬.২ বাণীকণ্ঠ নিদ্রা হইতে উঠিয়া শয়নগৃহে তামাক খাইতেছিল। (জটিল বাক্যে)

উত্তর: যে নিদ্রা হইতে উঠিয়া শয়নগৃহে যে তামাক খাইতেছিল সে-ই বাণীকণ্ঠ। |

৬.৩ বাণীকণ্ঠের ঘর একেবারে নদীর উপরেই। তাহার বাখারির বেড়া, আটচালা, গােয়ালঘর, চেঁকিশালা, খড়ের স্তুপ, তেঁতুলতলা, আম, কাঁঠাল এবং কলার বাগান নৌকাবাহী মাত্রেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। (একটি জটিল বাক্যে পরিণত করাে)

উত্তর: একেবারে নদীর ওপরে অবস্থিত বাণীকণ্ঠের ঘরের যে বাখারির বেড়া, আটচালা, গােয়ালঘর, চেঁকিশালা, খড়ের স্থূপ, তেঁতুলতলা, আম, কাঁঠাল এবং কলার বাগান, তা নৌকাবাহী তাদেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

৬.৪ প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়। যেন তাহার হইয়া কথা কয়। (একটি সরল বাক্যে পরিণত করাে)

উত্তর: প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া তাহার হইয়া কথা কয়।

৭. শূন্যস্থান পূরণ করো:

৭.১ অনু + রাগ = অনুরাগ
অনু + পম = অনুপম

৭.২ প্র + কার = প্রকার
প্ৰ + মাণ = প্রমাণ
প্র + বীণ = প্রবীণ

৭.৩ দিগবিদিক = দিক + বিদিক

৭.৪ গৃহস্থ > গেরস্ত

৭.৫ পঞ্জিকা > পাঁজি

👉 অষ্টম শ্রেণী বাংলা পাঠ্যপুস্তকের সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নগুলির উত্তর: Click Here
সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্টের প্রশ্নপত্র : Click Here
👉 আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করো: Click Here

You may also like: Class-8 Unit Test Question Papers


সুভা mcq
Class-8 Bengali Subha Question Answer সুভা
সুভা নামকরণের সার্থকতা বিচার করো উত্তর Class-8 Bengali Question-Answer Subha
Class-8 Bengali Important Question Answer Class-8 Bengali Suva Answer
অষ্টম শ্রেণী সুভা প্রশ্ন উত্তর

Class-8 Bengali সুভা প্রশ্ন-উত্তর

Official Website: Click Here Class-8 Bengali Subha Answer Class-8 Bengali Subha Answer

অষ্টম শ্রেণীর তৃতীয় ইউনিট টেস্টের বাংলা বিষয়ের প্রশ্নপত্র

সুভা প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Leave a Comment

CLOSE