Class-8 3rd-Unit-Test History Question

Class-8 3rd-Unit-Test History Question

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা,
তোমাদের তৃতীয় ইউনিট টেস্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৫ নভেম্বর, ২০২২ থেকে ৭ ডিসেম্বর, ২০২২ এর মধ্যে। তোমাদের সুবিধার্থে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে সকল বিষয়ের প্রতিটি অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং কয়েকটি মডেল প্রশ্নপত্র শেয়ার করলাম। তোমরা পাঠ্য বইটি ভালো মতো পড়ে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর খাতায় লিখে রাখবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর করতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাও।

3rd Unit Test– 2022
অষ্টম শ্রেণী
বিষয়: ইতিহাস
পূর্ণমান: 70 সময়: 2 ঘন্টা 30 মিনিট
প্রশ্নমান: ২

১. স্বরাজপন্থীদের আন্দোলনের মূল দাবী কী ছিল?
২. ভারত ছাড়ো আন্দোলনে মাতঙ্গিনী হাজরার ভূমিকা লেখো।
৩. কংগ্রেসের হরিপুরা ও ত্রিপুরি অধিবেশনের গুরুত্ব লেখো।
৪. তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার সম্পর্কে লেখো।

৫. বিনয়-বাদল-দীনেশ বিখ্যাত কেন?

উত্তর: ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ডিসেম্বর রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণ করতে যান বিনয় বসু , বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত। এছাড়া এই অভিযানে সাহায্য করেছিলেন রসময় শুর ও নিকুম্ভ সেন। বিনয় , বাদল ও দীনেশ রাইটার্স বিল্ডিং – এর অলিন্দে ঢুকে কারা বিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল সিম্পসন সহ আরও দুজনকে হত্যা করেন। পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে বিপ্লবীদের দীর্ঘক্ষণ ধরে গুলির লড়াই চলে। ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ার আগে বাদল বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। ক – দিন পর আহত বিনয়ের মৃত্যু হয়। দীনেশ সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।

৬. টীকা লেখো:
(i) স্বরাজ দল

উত্তর: কংগ্রেসের মধ্যে চিত্তরঞ্জন দাশ ও মোতিলাল নেহেরু প্রমুখ নেতারা গান্ধিনীতি থেকে সরে আসার জন্য আহ্বান জানান। তাঁদের মতে সরকারি আইন পরিষদকে বয়কট না করে তাতে অংশগ্রহণ করে সরকারী নীতি ও কাজে বাধা দেওয়া যাবে । অন্যদিকে গান্ধি প্রথা পুরোনো পথেই চলতে উৎসাহী ছিলেন । ফলে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে চিত্তরঞ্জন দাশ ও মোতিলাল নেহেরু মিলে কংগ্রেস – খিলাফৎ স্বরাজ্ দল তৈরি করেন। তাঁরা কংগ্রেসের মধ্যেই একটি গোষ্ঠী হিসাবে কাজ করতে থাকেন। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে চিত্তরঞ্জন দাশ মারা যাওয়ার পর গোষ্ঠীগুলি এক হয়ে যায়।

(ii) চৌরিচৌরার ঘটনা

উত্তর: ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে মহাত্মা গান্ধী অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। অসহযোগ আন্দোলন সর্বত্র অহিংস ছিল না। হিংসার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটেছিল উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারি ঐ গ্রামের স্থানীয় মানুষেরা প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হন। ক্রমে পুলিশ ও জনতার মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। জনতার তাড়ায় পুলিশেরা থানায় ঢুকে পড়লে থানার দরজা বন্ধ করে বাইরে থেকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনা ‘চৌরিচৌরার ঘটনা’ নামে পরিচিত।
এই ঘটনায় গান্ধীজি অহিংস অসহযোগ আন্দোলন তুলে নিয়েছিলেন।

(iii) গান্ধি – আরউইন চুক্তি:

উত্তর: গান্ধি ও লর্ড আরউইনের মধ্যে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৪ মার্চ যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তা ‘ গান্ধি আরউইন চুক্তি ’ বা ‘ দিল্লি চুক্তি ’ নামে পরিচিত। এই চুক্তিতে বলা হয় –(১) অহিংস সত্যাগ্রহী বন্দিদের ব্রিটিশ সরকার ছেড়ে দেবে। (২) ব্রিটিশ পণ্য বর্জন করা চলবে না । (৩) দমনমূলক আইনগুলি ব্রিটিশ সরকার তুলে নেবে । এ সবের পরিবর্তে কংগ্রেস আইন অমান্য আন্দোলন তুলে নেবে । পাশাপাশি লন্ডনে দ্বিতীয় বৈঠকে গান্ধিজি যোগ দেবেন। কিন্তু দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনায় গান্ধিজি হতাশ হয়ে, আবার আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করেন।

৭. নৌবিদ্রোহের কারণ কী?
৮. নৌবিদ্রোহের গুরুত্ব লেখো।

৯. সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলন কীভাবে গঠিত হয়েছিল?

উত্তর: ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে ঔপনিবেশিক সরকার ভারতীয়দের সাংবিধানিক অধিকার খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিশন তৈরি করে। স্যার জন সাইমনের নেতৃত্বে ওই কমিশন ভারতে আসে। এই কমিশনে কোনো ভারতীয় সদস্য না থাকায় ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক সংগঠনগুলি সাইমন কমিশনের বিরোধিতা করে। পাশাপাশি নানা স্তরে গণ আন্দোলন গড়ে ওঠে। দেশের বিভিন্ন হবতালে কমিশনকে কালো পতাকা দেখিয়ে’ সাইমন ফিরে যাও’ আওয়াজ তোলা হয়।

১০. টীকা লেখো:
(i) উডের ডেসপ্যাচ
(ii) দাক্ষিণাত্য হাঙ্গামা
(iii) সম্পদের বহির্গমন
(iv) সূর্যাস্ত আইন
(v) স্বদেশী ও বয়কট

১১. ইলবার্ট বিল বিতর্ক কী?

উত্তর: কোনো ভারতীয় বিচারকের ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করার অধিকার ছিল না । এই অসাম্য দূর করার জন্য জেনারেল লর্ড রিপনের আইনসভার সদস্য সি . পি . ইলবার্ট বিচার বিভাগীয় ক্ষেত্রে এই অসাম্য দূর করতে একটি বিল আনেন , তাতে বলা হয় ভারতীয় বিচারকরা , ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করতে পারবেন । এর প্রতিবাদে ইউরোপীয়রা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন । এর ফলে বিল যাতে প্রত্যাহার না করা হয় তারজন্য ভারতসভার উদ্যোগে ভারতীয়রা আন্দোলন শুরু করেন । উভয় পক্ষের এই আন্দোলন ও পাল্টা আন্দোলন বিতর্ককে ‘ ইলবার্ট বিল বিতর্ক বলা হয়।

১২. কাকে, কেন সীমান্ত গান্ধী বলা হত?

উত্তর: ভারতের উত্তর পশ্চিম প্রান্তে পাঠানরা আইন অমান্য আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। এদের নেতৃত্ব দেন খান আব্দুল গফফর খান। এরা ছিলেন অহিংস গান্ধিবাদী সংগ্রামী। গান্ধি অনুগামী হওয়ার সুবাদে আব্দুল গফফর খান ‘ সীমান্ত গান্ধি ‘ নামে পরিচিত হন। তাদের সংগঠনটির নাম ছিল খুদা – ই – খিদমদদ্গার।

১৩. কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলা কী ?

উত্তর: কাকোরি রেল স্টেশনে ডাকাতির অভিযোগে ব্রিটিশ সরকার ভগৎ সিং ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলা করে। এই মামলায় ভগতের সহযোগী রামপ্রসাদ বিশমিল , আসফাকউল্লাসহ চারজনের ফাঁসি হয়।

১৪. ‘লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা’ কী ?

উত্তর: ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ এপ্রিল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় আইনসভার কক্ষে ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত বোমা মারেন। দুই বিপ্লবীই স্বেচ্ছায় ধরা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ প্রশাসন ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ‘ লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা ‘ শুরু করেন। সেই মামলার রায়ে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মার্চ ভগৎ সিংহ সহ বঁটুকেশ্বর দত্ত , সুখদেও ও রাজগুরুর ফাঁসি হয়।

প্রশ্নমান: ৩

১. দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দোলন মহাত্মা গান্ধীর রাজনৈতিক জীবনে কী প্রভাব ফেলেছিল?
২. গান্ধীর সত্যাগ্রহ আদর্শের মূল ভাবনা কী ছিল?

৩. রাওলাট সত্যাগ্রহ ও জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনাটির বিবরণ দাও।

উত্তর: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে এ . টি . রাওলাটের নেতৃত্বে একটি কমিটি দুটি বিল আনেন। তাতে বিপ্লবী আন্দোলন আটকাতে ব্রিটিশ সরকারের হাতে আরো বেশি ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ওই বিল দুটির বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধি সত্যাগ্রহ আন্দোলন করেছিলেন। পাঞ্জাব প্রদেশে রাওলাট সত্যাগ্রহের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকার চূড়ান্ত দমনমূলক নীতি গ্রহণ করে। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ই এপ্রিল অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে অনেক মানুষ নিরন্ত্র প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। কিন্তু কমান্ডার মাইকেল ও ডায়ার ওই নিরস্ত্র মানুষগুলির উপর চূড়ান্ত সন্ত্রাস চালান। জালিয়ানওয়ালাবাগের বের হবার একটি মাত্র পথকে আটকে রেখে প্রতিবাদী মানুষের উপর একটানা গুলি চালিয়ে যাওয়া হয়। অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়। ভারতবাসী এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সার ’ উপাধি ত্যাগ করেন।


৪. আলিগড় আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য কি ছিল?
৫. ভারতীয় মুসলমানেরা খিলাফৎ আন্দোলন শুরু করেছিল কেন?
৬. মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে আইন অমান্য আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
৭. ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক কর্তব্যগুলি লেখো।
৮. ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব আলোচনা করো।
৯. ভারতীয় সংবিধান প্রস্তাবনাটি ব্যাখ্যা করো। প্রস্তাবনায় সমাজতন্ত্র / গণতান্ত্রিক / ধর্মনিরপেক্ষ শব্দের অর্থ লেখো।
১০. মহাত্মা গান্ধী দলিত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কি কি উদ্যোগ নিয়েছিল?

প্রশ্নমান: ৫
১. মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে আইন অমান্য আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তর: ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজির নেতৃত্বে কংগ্রেস পূর্ণ স্বরাজ অর্জনের কথা ঘোষণা করে এবং গান্ধির নেতৃত্বে আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৬ এপ্রিল আইন অমান্য কর্মসূচির লক্ষে গান্ধিজি গুজরাটের সবরমতী আশ্রম থেকে দীর্ঘ পদযাত্রা করে ডান্ডির সমুদ্রতীরে পৌঁছান। সমুদ্রের তটভূমি থেকে লবণ তৈরি করে গান্ধিজি লবন আইন ভঙ্গ করেন এবং প্রতীকীভাবে ভারতবর্ষে ঔপনিবেশিক শাসনকে অস্বীকার করেন । এরপর অতি দ্রুত দেশজুড়ে আইন অমান্য আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ হরতাল ও বিক্ষোভে যোগ দিতে থাকেন। বিদেশি দ্রব্য বয়কট করার পাশাপাশি সরকারকে কর দেওয়া বন্ধ করে। কৃষকরা রাজস্ব দিতে অস্বীকার করে। ব্যাপক সংখ্যায় নারীরা আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দেন। ভারতের উত্তর পশ্চিম প্রান্তে খান আবদুল গফফ্ফর খানের নেতৃত্বে পাঠানরা আইন অমান্য আন্দোলনে সামিল হন। আইন অমান্য আন্দোলনে ব্রিটিশ সরকার প্রবল দমননীতির সাহায্য নেয় । রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে কংগ্রেসকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। জাতীয়তাবাদী সংবাদপত্রগুলির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ চাপানো হয়। পাশাপাশি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে সাইমন কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার একটি বৈঠক ডাকে। কংগ্রেস এই বৈঠক বয়কট করে।
এর ফলে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ৪ মার্চ গান্ধি ও লর্ড আরউইনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তিতে ঠিক হয় অহিংস সত্যাগ্রহী বন্দিদের ব্রিটিশ সরকার মুক্তি দেবে। দমনমূলক আইনগুলি সরকার তুলে নেবে। এর বদলে কংগ্রেস আইন অমান্য আন্দোলন তুলে নেবে। পাশাপাশি লন্ডনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গান্ধিজিকে উপস্থিত থাকাতে রাজি করায় ব্রিটিশ সরকার। কিন্তু দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনায় হতাশ গান্ধিজি ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের প্রথম থেকে আবার আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৩২ থেকে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে লক্ষাধিক মানুষ আইন অমান্য আন্দোলনের জন্য জেলে যান । ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে আইন অমান্য আন্দোলন নিঃশর্ত ভাবে তুলে নেওয়া হয়। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের আইন অমান্য আন্দোলন বিশেষ সফল হয় নি । হিন্দু মুসলিম ঐক্যও তেমনভাবে দেখা যায় নি। পাশাপাশি এই আন্দোলনে শহুরে শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত মানুষের যোগদান কম ছিল । শ্রমিকরা কম যোগ দিয়েছিলেন। তবে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা এই আন্দোলনে বেশি সংখ্যায় যুক্ত হয়েছিলেন। পাশাপাশি জাতীয় কংগ্রেস গান্ধির স্বরাজের আদর্শ থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছিল। রাজনৈতিক দল হিসেবে কংগ্রেস ধীরে ধীরে সংবিধানিক অধিকার পেতে বেশি উৎসাহী হয়ে পড়েছিল।

২. ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতাজি ও আজাদ হিন্দ বাহিনীর ভূমিকা সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তর: আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনারা দিল্লী পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে আজাদ হিন্দ ফৌজ দেশের মুক্তি তথা স্বাধীনতার জন্য যে লড়াই চালিয়েছিল তা ছিল সকল প্রশংসার ঊর্ধ্বে। তাই ‘গান্ধীজী’ নিজে বলেছেন- “যদিও আজাদ হিন্দ ফৌজ তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি, কিন্তু তা সত্বেও তারা এমন কিছু করেছে, যে জন্য তারা গর্ববোধ করতে পারে।”

● দেশত্যাগ:
১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের 2 জুলাই সুভাষচন্দ্র কে ভারত রক্ষা আইনে গ্রেফতার করে তার নিজ গৃহে বন্দী করে রাখা হয়। কিন্তু তা সত্বেও সুভাষচন্দ্র মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন নামে ছদ্মবেশে সেখান থেকে পালিয়ে দেশত্যাগ করেন।

● আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সুভাষচন্দ্র ব্রিটিশ সরকারের উপর চাপ দিতে উদ্যোগ নেন।
রাসবিহারী বসুর অনুরোধে সুভাষচন্দ্র জাপানে গিয়ে আজাদ হিন্দ বাহিনীর দায়িত্বভার নেন। ৪০ হাজার ভারতীয় যুদ্ধবন্দি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বসবাসরত ভারতীয়দের মধ্যে অনেকে আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগ দেয়। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২১ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ বা স্বাধীন ভারতের যুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই হন তার প্রধানমন্ত্রী ও বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।

● আজাদ হিন্দ সরকারের লক্ষ্য-

সুভাষচন্দ্র ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর আন্দামানে উপস্থিত হয়ে স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি যুব সমাজের মনে আগুন জ্বালিয়ে বলেন –

“তােমরা আমাকে রক্ত দাও,
আমি তােমাদের স্বাধীনতা দেব।”

তিনি আরো বলেন-
“দিল্লি চলাে।”

‘জয় হিন্দ’ ধ্বনি দিয়ে তিনি বাহিনীর জওয়ানদের উদ্বুদ্ধ করেন। নেতাজি ঘোষণা করেন ‘আজাদ হিন্দ সরকারের’ প্রধান লক্ষ্য হলো ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসনের উৎখাত করা।

● আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান:

আন্দামান থেকে সুভাষচন্দ্র ব্রম্ভদেশে যান এবং সেখান থেকে ভারত অভিযান শুরু করেন। প্রথমে আজাদ হিন্দফৌজ আরাকান দখল করে (৪ ফেব্রুয়ারি , ১৯৪৪ খ্রি.)। এরপর ১৮ মার্চ ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ ব্রম্ভদেশ অতিক্রম করে ভারতের মাটি স্পর্শ করে। মণিপুরের মৈরাং-এ ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন (১৪ এপ্রিল) করা হয়। মণিপুরের কোহিমা শহরটি ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ দখল করে। এরপর শুরু হয় ইম্ফল দখলের লড়াই। কিন্তু, প্রবল প্রকৃতিক বিপর্যয় ও অন্যান্য একাধিক কারণ এই ফৌজের সব ধরনের প্রয়াসকে ব্যর্থ করে দেয়।

● মূল্যায়ন:
সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের লড়াই ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নকে একটি আন্তর্জাতিক বিষয়ে উন্নীত করে। আজাদি সেনাদের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ ও আত্মবলিদান প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ভারতবাসীকে দেশাত্মবােধে উদ্বুদ্ধ করবে, এ বিষয়ে কোনাে সন্দেহ নেই।

৩. অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য কি? এই আন্দোলন কেন রদ হয়েছিল?

উত্তর: প্রধান জাতীয় আন্দোলনের মধ্যে অন্যতম ছিল মহাত্মা গান্ধীর অহিংস অসহযোগ আন্দোলন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়।

অসহযোগ আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য:

• (i) আন্দোলনটি ছিল মূলত ভারতে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ ও অহিংস প্রতিবাদ।

• (ii) প্রতিবাদের চিহ্ন হিসাবে আইনজীবী মানুষ আদালত থেকে এবং মধ্যবিত্ত ভারতীয়রা সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন।

• (iii) ছাত্ররা সরকার নিয়ন্ত্রিত বা সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল ও কলেজ প্রত্যাহার আন্দোলনে যোগ দেয়।

• (iv) বিদেশি দ্রব্য বয়কটের পাশাপাশি জনসমক্ষে বিদেশি কাপড় পোড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

• (v) শ্রমিক ও কৃষকেরা অনেকেই এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। যদিও শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মানুষেরা গণহারে আন্দোলনে যোগ দেননি।

● আন্দোলন রদ হওয়ার কারণ:

অসহযোগ আন্দোলন সর্বত্র অহিংস ছিল না। হিংসার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটেছিল উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারি ঐ গ্রামের স্থানীয় মানুষেরা প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হন। ক্রমে পুলিশ ও জনতার মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। জনতার তাড়ায় পুলিশেরা থানায় ঢুকে পড়লে থানার দরজা বন্ধ করে বাইরে থেকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় গান্ধী অহিংস অসহযোগ আন্দোলন তুলে নিয়েছিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল দেশবাসী তখনও অহিংস আন্দোলনের জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠেনি।

৪. চরমপন্থী রাজনীতির উত্থানের মূল কারণ আলোচনা করো।
৫. ১৯৪০-১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতভাগ কীভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল?
৬. গান্ধীর অহিংস সত্যাগ্রহ-র আদর্শটি ব্যাখ্যা করো। এই আদর্শের সঙ্গে কংগ্রেসের প্রথমদিকে নরমপন্থীদের আদর্শের একটি তুলনামূলক আলোচনা করো।
৭. জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হিউমের ভূমিকার সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ করো।

👉 সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্টের প্রশ্নপত্র : Click Here
👉 আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করো: Click Here
Class-8 3rd-Unit-Test Question ইতিহাস

You may also like: Class VII Notes

Class 8 Third Unit Test 2022 History Question Paper Class 8 Third Unit Test History Suggestion

Class 8 3rd Unit Test ইতিহাস Question Paper 2022

WBBSE Class 8 Model Question Paper Unit Test Question Paper ইতিহাস Class VIII ইতিহাস Third Unit Test Question Paper pdf Download

Class 8 Third Term Test Itihas Question Paper

Official Website: Click Here Class-8 Third-Unit-Test History Question

অষ্টম শ্রেণীর তৃতীয় ইউনিট টেস্টের ইতিহাস বিষয়ের প্রশ্নপত্র

Class-8 3rd-Unit-Test History Question Class-8 3rd-Unit-Test History Question

অষ্টম শ্রেণী তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ইতিহাস প্রশ্নপত্র

Class 8 Final Term Exam History Question Paper

Class-8 3rd-Unit-Test History Question

1 thought on “Class-8 3rd-Unit-Test History Question”

Leave a Comment