বইমেলা প্রবন্ধ রচনা
বইমেলা
ভূমিকা:
মেলা বঙ্গসংস্কৃতির প্রাণ কেন্দ্র। মেলা বাঙালির মহামিলন স্থল। মেলায় বাঙালি পেয়েছে সঞ্জীবনী প্রাণশক্তি। একদা একটি মেলাকে কেন্দ্র করে বাংলার নবজাগরণ দেখা দিয়েছিল। বর্তমানে বইমেলাকে কেন্দ্র করেও শহরে, নগরে ও গ্রামে গঞ্জে এক জাগরণ দেখা দিয়েছে।
বইমেলা:
জ্ঞানের প্রসারের ক্ষেত্রে বই হল একটি বড় মাধ্যম। তাই ইংল্যান্ড ,আমেরিকা, জার্মানি, ইতালি প্রভৃতি স্থানে প্রতিবছর বৃহৎ জাতীয় মেলার অঙ্গ স্বরূপ বইয়ের প্রদর্শনী বসে। পরবর্তীকালে একক ও স্বতন্ত্র মেলা রূপে বইমেলা প্রচলিত হয়। পৃথিবীর বইমেলাগুলির মধ্যে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুটের স্থায়ী বই মেলাটি সবচেয়ে বড়।
মনুষত্ব বিকাশের মাধ্যমে:
শিক্ষিত মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম রসদ হলো বই। বই হল আয়নার মত, যাতে আমাদের মনের প্রতিবিম্ব ধরা পড়ে। বইয়ের মত অন্তরঙ্গ সহচর পৃথিবীতে আর কিছু নেই। আমাদের নিঃসঙ্গ মুহূর্তগুলিকে বই ভরিয়ে তোলে। শিশু কিশোরের কাছে বই দিক দর্শনের কাজ করে। তবে বইমেলা সাধারণভাবে অনুষ্ঠিত রথের মেলা, গাজন মেলা প্রভৃতি মেলাগুলি থেকে একটু স্বতন্ত্র। এটি বইপ্রেমী মানুষের মিলনতীর্থ।
মিলনমেলা:
বইকে কেন্দ্র করে বইমেলা। প্রাঙ্গণে এক পরিবেশে সামাজিক মেল বন্ধন গড়ে উঠতে দেখা যায়। বইমেলায় প্রকাশক এবং পুস্তক বিক্রেতারা বিশ্বের নানা প্রান্তের নানা বিষয়ের বই এনে বিভিন্ন রুচির মানুষের সামনে এনে হাজির করেন। স্বাদ আছে সাধ্য নেই, এমন বইপ্রেমী মানুষ বইমেলায় এসে বিভিন্ন বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়। বইমেলা জ্ঞানের অসীম ভান্ডারকে আমাদের সামনে এনে দেয়। বই মেলার উপযোগিতা বিবিধ। বইমেলায় পাঠক বিপুল সংখ্যক বইয়ের সান্নিধ্যে এসে যেমন আনন্দ পায় তেমনি প্রকাশক ও বিক্রেতারা বাণিজ্য করার সুযোগে সামগ্রিকভাবে লাভবান হয়।
পশ্চিমবঙ্গে বইমেলা:
পৃথিবীতে সব দেশেই এখন বইমেলা বসে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও বইমেলার আয়োজন হয়। কলকাতার বইমেলা আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় সাত / দশ দিনের বইমেলা হয়। এইসব মেলায় গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ ভিড় করেন। যারা সব সময় বই কেনা এবং পড়ার সুযোগ পান না, এইসব মেলায় এসে তারা বহু নতুন বই হাতে নিয়ে তারা পড়তে পারেন। কলকাতার বইমেলা প্রায় দুই যুগ ধরে চলে আসছে। বই পড়তে উৎসাহ দেওয়ার পক্ষে এই মেলার ভূমিকা ভোলার নয়।
আনন্দের ভান্ডার:
বইমেলা আসলে আনন্দমেলা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন- মানুষ বই দিয়ে অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে সাঁকো গঠন করেছে। ভিক্টর হুগো বলেছেন, বই বিশ্বাসের অঙ্গ,বই মানবসমাজকে সভ্যতা টিকিয়ে রাখার জ্ঞান দান করে। অতএব বই হচ্ছে সভ্যতার রক্ষাকবচ। সভ্যতার প্রতিবিম্ব কে স্থায়ী রূপে ধরে রাখে বই। সুন্দর – অসুন্দর, ভালো মন্দে মানুষের জীবন। এক একটা বই যেন এক একটা জীবনের চলমান প্রতিবিম্ব। অনন্ত মানুষের অফুরন্ত জীবন নিয়েই মানুষের পরিপূর্ণ মহাজীবন। সেই মহাজীবনের মেলা বইমেলা।
উপসংহার:
বইকে সর্বজনীন করার জন্য বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম। বইমেলা নবীন লেখকদের কাছে প্রতিভা বিকাশের মুক্তমেলা। নবীন লেখকদের রচনা প্রকাশিত হয় বইমেলায়। তাছাড়া এই মেলা উপলক্ষে শিল্পী কলাকুশলীরা ও তাদের সৃষ্টির সম্ভার নিয়ে উপস্থিত হতে পারেন, এইভাবে বইমেলা প্রকৃতই এক মিলন মেলা হয়ে ওঠে।
👉 সমস্ত রচনা দেখতে: Click Here
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন: Click Here
Subscribe Our YouTube Channel: Click Here
মাধ্যমিক রচনা: একটি গাছ একটি প্রাণ
বাংলা রচনা একটি গাছ একটি প্রাণ
মাধ্যমিক রচনা সাজেশন | উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা প্রবন্ধ রচনা pdf | উচ্চ মাধ্যমিক রচনা সাজেশন |
বাংলা রচনা মাধ্যমিক সাজেশন | বাংলা রচনা | Poribesh Rokhay ChatroChatrider Vumika
গুরুত্বপূর্ণ বাংলা রচনা | প্রবন্ধ রচনা class 10 | উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা রচনা সাজেশন
বইমেলা প্রবন্ধ রচনা
Madhyamik Bengali Suggestion
তোমার দেখা একটি বইমেলা রচনা | কলকাতা বইমেলা রচনা
কলকাতা বইমেলা রচনা | তোমার দেখা একটি বইমেলা রচনা | তোমার দেখা একটি বইমেলা রচনা