Class-7 Bengali Ekusher-Kobita Question-Answer সপ্তম শ্রেণী একুশের কবিতা প্রশ্ন উত্তর
সপ্তম শ্রেণী বাংলা ‘একুশের কবিতা’ প্রশ্ন ও উত্তর
সপ্তম শ্রেণী
একুশের কবিতা
পাঠ্য পুস্তকের প্রশ্নগুলির উত্তর
১. এই কবিতায় কিছু চন্দ্রবিন্দু-যুক্ত শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। কাপলাে’ এবং ‘দাঁড়িয়েছেন। প্রসঙ্গত দুটি শব্দই ক্রিয়া। চন্দ্রবিন্দু দিয়ে শুরু এমন পাঁচটি অন্য ক্রিয়া ব্যবহার করে পাঁচটি বাক্য লেখাে। একটি করে দেওয়া হল, হাঁটা।
উত্তর:
হাঁটা- অনেকক্ষণ বাসে চড়ে যাওয়ার পর সুনীলদের হাঁটা শুরু হল।
বাঁচাল- আই লিগের শেষ ম্যাচে যুব একাদশের গােলরক্ষক শেষ মুহূর্তে কোনােমতে গােলটা বাঁচাল।
কাঁদল- মহান বিজ্ঞানী আবদুল কালামের প্রয়াণে সেদিন সব মানুষই কাঁদল।
ঝপাল- শিশুটিকে বাঁচাবার জন্য পাকা সাঁতারুর মতােই অনুপ গভীর জলে ঝাপাল।
খোঁচাল- নিষ্ঠুর আনন্দ পাওয়ার জন্য সে একটি নিরীহ কুকুরকে খোঁচাল।
২. গুনগুন: মৌমাছি যেভাবে ডানার একটানা আওয়াজ করে, তাকে গুনগুন বলে। বাস্তব ধ্বনির অনুকরণে তৈরি হওয়া এই ধরনের শব্দকে বলে অনুকারী বা ধ্বন্যাত্মক শব্দ। নীচে কয়েকটি ধবন্যাত্মক শব্দ শিখে নিতে পারবে।
উত্তর:
পাখা = বন বন করে ঘুরছে।
মাছিটা = ভন্ ভন্ করে উড়ছিল।
হাওয়া = সন্ সন্ করে বইছে।
নদী = চলছে কল কল করে।
কাচের = বাসনগুলো ঝন্ ঝন্ করে ভেঙে গেল।
বাজ = পড়ল কড় কড় শব্দ করে।
পটকা = ফাট্ছিল দুম দাম করে।
বৃষ্টি = পড়ছিল ঝর্ ঝর্ করে।
কাগজটা = ফর্ ফর্ করে ছিঁড়ে গেল।
কয়েকটা তাল = পড়ল ধুপ ধাপ করে।
৩. “আমার মায়ের গাওয়া কত না গানের কলি” – এখানে ‘মায়ের গাওয়া’ শব্দবন্ধটি একটি বিশেষণের কাজ করছে৷ এরকম আরো অন্তত পাঁচটি তৈরি করো। একটি করে দেওয়া হলো, ‘মায়ের দেওয়া মোটা কাপড়’
উত্তর:
বাবার লেখা বই।
বোনের পড়া কবিতা।
ভাইয়ের পাওয়া খেলনা।
দিদির আঁকা ছবি।
দিদার বলা গল্প।
৪. নীচের বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে ও বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে পরিবর্তন করে বাক্য রচনা করো :
উত্তর:
সুর (বি.) > সুরেলা (বিণ.) – সুরেলা কণ্ঠ সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে।
দেশ (বি.) > দেশি (বিণ.) – দেশি কাপড়ের চাহিদা এখন অনেক কমে গেছে।
মাঠ (বি.) > মেঠো (বিণ.) – মেঠো সুরের পল্লিগীতি এখন আর শোনাই যায় না।
বন (বি.) > বন্য (বিণ.) – বন্য পশুরা বনেই সুন্দর।
মিষ্টি (বি.) > মিষ্টতা (বিণ.) – কথায় মিষ্টতা না থাকলে সবার কাছে প্রিয় হওয়া যায় না।
মুখর (বিণ.) > মুখরতা (বি.) – চারিদিক মুখরতা-য় পূর্ণ তবুও আমি একা।
ইতিহাস (বি.) > ঐতিহাসিক (বিণ.) – ঐতিহাসিক সবসময় ইতিহাসের সত্যতা পর্যবেক্ষণ করেন।
ফুল (বি.) > ফুলেল (বিণ.) – ফুলেল গন্ধে চারিদিক মাতোয়ারা।
৫. ‘রব’ শব্দটিকে একবার বিশেষ্য এবং একবার ক্রিয়া হিসেবে দুটি আলাদা বাক্যে ব্যবহার করে দেখাও।
উত্তর:
রব’ (বিশেষ্য)- যে-কোনাে জঙ্গলে বেড়াতে গেলেই রাতের বেলায় ঝিল্লির রব শােনা যায়।
‘রব’ (ক্রিয়া)- তুমি রহিলে আমি রব।
৬. ‘কলি’, ‘সুর’, ‘পাল’ — শব্দগুলিকে দুটি করে ভিন্ন অর্থে ব্যবহার করে আলাদা বাক্যে লেখো।
উত্তর:
উত্তর:
কলি (কুঁড়ি): ফুলগাছে ডালে ডালে কলি এসেছে।
কলি (যুগ): একেই বলে ঘোর কলি, বিশ্বাস বলে কিছু নেই।
সুর (গানের সুর): এই গানের সুরটি অত্যন্ত শ্রুতিমধুর।
সুর (দেবতা): সুর ও অসুরের মধ্যে কঠিন যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত সুররাই জয়ী হলেন।
পাল (নৌকার মাস্তুলে খাটানো কাপড়): নৌকা চলেছে পাল তুলে দিয়ে।
পাল (দল): ভেড়ার পাল চলেছে রাস্তা দিয়ে।
৭. “মুখ শব্দটিকে পাঁচটি আলাদা অর্থে ব্যবহার করে পাঁচটি আলাদা বাক্য লেখো।
উত্তর:
গৌরবান্বিত করা: নাতি তার দাদুর মুখ উজ্জ্বল করেছে।
অভিমান: গৌরী সারাদিন মুখভার করে থাকে।
প্রসন্ন হওয়া: ভগবান একটু মুখ তুলে চাওয়ায় ছেলেটা মাস কয়েক আগে চাকরি পেয়েছে।
ভর্ৎসনা করা: কাজের লোকটি সর্বদাই গিন্নির মুখ ঝামটা খায়।
গালিগালাজ করা: মোতিলাল রেগে গেলেই মুখ ছোটায়।
৮. প্রত্যয় নির্ণয় করো:
উত্তর:
কথকতা- কথক + ‘তা’ প্রত্যয়
মুর্শিদি- মুর্শিদ + ‘ই’ প্রত্যয়
মুখর- মুখ + ‘র’ প্রত্যয়।
পােহাইল- পােহা + ‘ইল’ প্রত্যয়
ভাটিয়ালি- ভাটিয়াল + ‘ই’ প্রত্যয়
৯. নিন্মরেখ অংশগুলির কারক-বিভন্তি নির্ণয় করো:
৯.১ পাখি সব করে রব।
উত্তর: কর্তৃকারকে শূন্য বিভক্তি।
৯.২ কাননে কুসুমকলি সকলি ফুটিল।
উত্তর: অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
৯.৩ তাই তো সহস্র পাখির কলতানে আজ দিগন্ত মুখর।
উত্তর: কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৯.৪ তিনি বাংলাভাষায় কথা বলতে বড়ো ভালোবাসেন।
উত্তর: কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৯.৫ রাখাল গরুর পাল লয়ে যায় মাঠে।
উত্তর: কর্তৃকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
১০. একটি-দুটি বাক্যে উত্তর দাও :
১০.১ “পাখি সব করে রব” — উদ্ধৃতাংশটি কার লেখা কোন কবিতার অংশ? কবিতাটি তাঁর লেখা কোন বইতে রয়েছে?
উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি মদনমােহন তর্কালঙ্কারের লেখা ‘প্রভাতবর্ণন’ কবিতার অংশ।
কবিতাটি তাঁর লেখা ‘শিশুশিক্ষা বইতে রয়েছে।
১০.২ এই পঙক্তিটি পাঠের সুরকে ‘মন্ত্রের মতো’ বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: এই পঙক্তিটি পাঠের সুর পাঠের সময় মনের মধ্যে মন্ত্রপাঠের মতােই স্বর্গীয় অনুভূতির সৃষ্টি হয় বলে একে ‘মন্ত্রের মতাে’বলা হয়েছে।
১০.৩ এই সুরকে কেন ‘স্মৃতির মধুভাণ্ডার’ বলা হয়েছে? তা কবির মনে কোন স্মৃতি জাগিয়ে তোলে?
উত্তর: এই সুরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কবির শৈশবে পাঠশালায় কবিতাটি পড়ার স্মৃতি, যা সবসময়েই কবির কাছে মধুর এবং অমলিন। তাই একে স্মৃতির মধুভাণ্ডার’ বলা হয়েছে।
তাঁর মনে পড়ে যায় বাংলার দেশ-মাঠবননদী, অজস্র লােকগানের কথা। এ সবের মধ্য দিয়েই কবির মনে বাংলা মায়ের মুখ মধুর এক স্মৃতি হয়ে জেগে ওঠে।
১০.৪ “সেই আমার দেশ-মাঠ-বন-নদী” — দুই বঙ্গ মিলিয়ে তিনটি অরণ্য ও পাঁচটি নদীর নাম লেখো।
উত্তর: দুই বঙ্গ মিলিয়ে তিনটি অরণ্য হল— সুন্দরবন, গোরুমারা অভয়ারণ্য, রামসাগর জাতীয় উদ্যান।
এবং পাঁচটি নদী হল- গঙ্গা, পদ্মা, মেঘনা, দামোদর, কংসাবতী, যমুনা।
১০.৫ টীকা লেখাে : জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, বিন্নিধান, কথকতা, রূপকথা।
উত্তর:
জারি-
এটি বাংলার একধরনের মুসলমানি পল্লিসংগীত। ফারসি শব্দ যারী’ থেকে এর উৎপত্তি। জারিগানের অর্থ হল শােকসংগীত। কারবালার প্রান্তরে হজরত মহম্মদের দৌহিত্র হােসেন এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের শােচনীয় মৃত্যুকে উপলক্ষ্য করে জারিগান রচিত হয়।
সারি-
প্রধানত বাংলাদেশের মাঝি-মাল্লাদের বিশেষ ধরনের গান। অন্যান্য শ্রমজীবীরাও কাজের সময় মূলত কষ্ট কমানাের জন্য এই গান করেন। মােগল বাদশাহদের সময় এই গানের প্রসার ঘটে। সারিগানের মূল গায়ককে বলা হয় বয়াতি। মূলত পূর্ববঙ্গেই এই গানের ব্যাপক প্রচলন দেখা যায়।
ভাটিয়ালি-
এটি মাঝি-মাল্লাদের বিশেষ ধরনের গানের সুর। সুর অর্থেই ভাটিয়ালি কথাটি ব্যবহৃত হয়।
মুর্শিদি-
মুসলমান সাধু ও মহাপুরুষদের পির বলা হয়। মুর্শিদি এই পিরের গান।
বিন্নিধান-
এক ধরনের আউশ ধান। নীচু জলাজমিতে বিশেষত পূর্ববঙ্গে এর চাষ হয়। এই ধানের খই খুব ভালাে হয়। কথকতা রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ ইত্যাদি গ্রন্থের পাঠ ও ব্যাখ্যা করার ধরনকে বলা হয় কথকতা। এই কথকতার কাজটি যিনি করেন, তাঁকে বলা হয়, কথক’বা কথকঠাকুর।
রূপকথা-
ছেলেভুলানাে কাল্পনিক কাহিনিকে বলা হয় রূপকথা’। এই কাহিনিতে রাক্ষস রাক্ষসী, ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমী প্রভৃতি কাল্পনিক চরিত্র থাকে। আর থাকে রাজকুমারী এবং অবশ্যই রাজকুমার। তবে এরা কেউই বাস্তব চরিত্র নয়, সবাই কাল্পনিক।
১০.৬ তোমার জানা দুটি পৃথক লোকসংগীতের ধারার নাম লেখো।
উত্তর: আমার জানা দুটি পৃথক লোকসংগীতের ধারা হল ভাওয়াইয়া ও বাউল গান।
১০.৭ “ইতিহাস থমকে দাঁড়িয়ে লিখে নিলো সব” — “সব” বলতে এখানে কী কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ইতিহাস থমকে দাঁড়িয়ে একুশের ভাষা-আন্দোলনের প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় লিখে নিল। মাঠঘাটবাটহাটবন সর্বত্র জেগে-ওঠা মানুষের তীব্র অসন্তোষ এবং প্রতিবাদ, পূর্ব-পাকিস্তানের সেনাদের গুলিতে বিপ্লবী তরুণদের মৃত্যু— ভাষার অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের সেইসব কাহিনি ইতিহাস থমকে দাঁড়িয়ে একে একে লিখে নিল।
১০.৮ “ তাই তো সহস্র পাখির কলতানে আজ দিগন্ত মুখর” — “সহস্র পাখি” কাদের বলা হয়েছে?
উত্তর: উর্দুকে পূর্ব-পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্তের প্রতিবাদে একসময় বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। তারা বাংলা ভাষার মর্যাদাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিল। এরপর দেশে পুনরায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে এল। হাজার হাজার মানুষ আবার আনন্দে মুখরিত হয়ে উঠল। এই মানুষদেরই কবি ‘সহস্র পাখি’ বলে চিত্রিত করেছেন।
১১. ব্যাখ্যা করো:
১১.১ ‘কয়েকটি পাখি…পড়ে গেল মাটিতে’।
উত্তর: মাতৃভাষার অধিকার নিয়ে যেসব সংগ্রামী মানুষ লড়াই করেছে, প্রতিবাদ করেছে— তাদের ওপর সেই কাকভোরে নেমে এসেছে গুলির আঘাত। আর তারা মাতৃভাষার সম্মানে নিজের প্রাণকে তুচ্ছ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে রক্তাক্ত অবস্থায়।
১১.২ ‘সেই শোকে কালবৈশাখীর ঝড় উঠলো আকাশে।’
উত্তর: ভাষা আন্দোলনে যে-সব ছাত্র এবং বুদ্ধিজীবী সামিল হয়েছিল তাদের মাতৃভাষা বাঁচাতে তাদের ওপর নির্বিচারে আঘাত নেমে আসে। আর সেই আঘাতে তারা মৃত্যুবরণ করে। তার ফলে মানুষের মনে যেমন শোকের ছায়া নেমে আসে, তেমনি প্রকৃতির মধ্যেও তার প্রভাব পড়ে, যেন কালবৈশাখীর ঝড়ে ফুঁসে উঠেছিল।
১১.৩ ‘কথায় কথায় কথকতা কতো রুপকথা’।
উত্তর: রূপকথার গল্প শুনতে কার না ভালো লাগে। তাও আবার যদি মায়ের মুখে হয়। আসলে এই রূপকথার মধ্যেই আছে আমাদের অতীতের ইতিহাস,অতীতের গৌরব। আর সেই গৌরবময় ইতিহাসকে কথকতার ঢঙে কথায় কথায় মায়েরা বলে চলেন এক প্রজন্ম থেকে আর এক প্রজন্মে।
১১.৪ তাই তো আজ দ্যাখো এ মিছিলে এসে দাঁড়িয়েছেন আমার মা।”
উত্তর: এ-মিছিল প্রতিবাদের মিছিল। ভাষা নিয়ে প্রতিবাদ। মাতৃভাষার সপক্ষে প্রতিবাদ, মিছিল। আর এই মাতৃভাষার মিছিলে কবি সর্বজনের মাকে রূপকল্প হিসাবে ব্যবহার করেছেন।
১২. আট-দশটি বাক্যে উত্তর দাও:
১২.১ এই কবিতায় “পাখি’- শব্দের ব্যবহার কতখানি সার্থক হয়েছে তা কবিতার বিভিন্ন পঙ্ক্তি উদ্ধৃত করে আলোচনা করো।
উত্তর: এই কবিতায় ‘পাখি’ শব্দের ব্যবহার খুব তাৎপর্যপূর্ণ। ‘পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল’— এখানে পাখি যেমন রাতের অন্ধকারকে সরিয়ে ভোরের সূচনাবার্তাকে ঘোষণা করে, তেমনি ভাষা আন্দোলনে সামিল মানুষেরা মাতৃভাষার মুক্তি আনতে চেয়েছিল। আবার, ‘কয়েকটি পাখির গান শেষ হতে না হতেই তারা ঝরে পড়ে গেল, মাটিতে’— এখানে আসলে প্রতিবাদে সামিল ভাষা আন্দোলনকারীদের ওপর নামে বন্দুকের গুলি। তারা অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দেয়। কিন্তু মাতৃভাষার অধিকার তারা প্রতিষ্ঠা করে যায়। ‘তাই তো সহস্র পাখির কলতানে আজ দিগন্ত মুখর’— এখানে আন্দোলনে সামিল মানুষজনের প্রতিবাদে শেষপর্যন্ত মাতৃভাষা স্বাধিকার ফিরে পায়। এইভাবে পুরো কবিতা জুড়ে যেন ‘পাখি’ একটা গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করছে।
১২.২ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তর: ‘একুশের কবিতা’ নামকরণ কতখানি সার্থক তা আলোচনার পর্যায়ক্রমে দেখে নেব। বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে তৎপর বাংলা ভাষাভাষী মানুষ। তাদের ওপর রাষ্ট্রীয় জুলুম ও অত্যাচার চলে। কিন্তু নিজের মাতৃভাষার অধিকারের লড়াইয়ে তারা প্রতিবাদে সামিল হয়। পথে নেমে মিছিল করে। তাদের ওপর গুলির আঘাতও নেমে আসে। তারা জীবন দিয়ে বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে যায়। এই বিষয়কে নিয়ে কবি কবিতাটা লেখেন। আর যেহেতু ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি এই আন্দোলনটা জোরদার হয়, তাই ‘একুশের কবিতা’ নামকরণটি সার্থক।
১৩. “শুধু মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়বদ্ধতার প্রকাশ নয়, এই কবিতায় রয়েছে আবহমানের ও অমরতার প্রতি বিশ্বাস” — পাঠ্য কবিতাটি অবলম্বনে উপরের উদ্ধৃতিটি আলোচনা করো।
উত্তর: মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের মতো। এর মাধ্যমেই মানুষের আত্মপ্রকাশ ও আত্মবিকাশ। তাই কোনো মানুষই মাতৃভাষার অপমান সহ্য করতে পারে না। কবিও মাতৃভাষামুখিন, তাঁরও আত্মপ্রকাশ বা আত্মবিকাশ মাতৃভাষাকে অবলম্বন করেই। তাই ‘একুশের কবিতা’য় তিনি মাতৃভাষার প্রতি কেবল অসীম শ্রদ্ধাই প্রকাশ করেননি, এই ভাষার প্রতি তাঁর গভীর দায়বদ্ধতা ও এর আবহমানতা বা অমরতার প্রতি তাঁর বিশ্বাসও কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে। কবি মনে করেন ভাষার একটা নিজস্ব ঐতিহ্য আছে। এই কবিতায় সেই ঐতিহ্যেরই স্মারক করে তিনি এনেছেন মাতৃভাষার সুধামাখানো কথকতা–রূপকথার আশ্চর্য উন্মাদনাকে। ভাষার স্পর্শ গায়ে মেখে জীবন্ত হয়ে ওঠা জারি-সারি-ভাটিয়ালি-মুর্শিদি ইত্যাদি লোকগীতির দীর্ঘ প্রবহমানতাকে তিনি প্রাণের মূল্যে যাচিত করেন। বাংলার সুমিষ্ট উৎকৃষ্ট খইয়ের বিন্নিধান তাঁর কাছে মূল্য পায় স্বর্গীয়ভাবে সমৃদ্ধ হয়ে। শিশুকালে পাঠশালায় দুলে দুলে পড়া বাল্য-কবিতাকে তিনি অন্যান্য বঙ্গভাষী মানুষের মতো ভুলতে পারেন না। মিছিলে এসে দাঁড়ানো মায়ের অমোঘ উপস্থিতি ও কবির মনে অমরতার ঐতিহ্যগত প্রকাশ ঘটায়।
☛ সমস্ত অধ্যায়ের উত্তর পেতে: Click Here
👉 Subscribe Our YouTube Channel: Click Here
You may also like: সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়
Class-7 Bengali Ekusher-Kobita Question-Answer
Official Website: Click Here
Class-7 Bengali Ekusher-Kobita Question-Answer
সপ্তম শ্রেণীর বাংলা একুশের কবিতা প্রশ্ন-উত্তর
Class-7 Bengali Ekusher-Kobita Question-Answer
একুশের কবিতা প্রশ্ন উত্তর সপ্তম শ্রেণী বাংলা
Class-7 Bengali Ekusher-Kobita Question-Answer