১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর

Categories: Uncategorized

Amazon থেকে কিনুন খুব কম দামে Smart Watch!

Smart Watch
Buy Now

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর

১. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?

অনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজ ব্যবহার:
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বাহিনীতে ‘অনফিল্ড রাইফেল’ চালু করা হয়। এই রাইফেলের কার্তুজ ব্যবহারের আগে তার খোলস দাঁত দিয়ে কাটতে হতো। গুজব রটে যে এই কার্তুজের খোলস গরু ও শুকরের চর্বি দিয়ে তৈরি। গরুর চর্বি ব্যবহারে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ক্ষুব্ধ হয় এবং শুকরের চর্বি ব্যবহারে মুসলমানরা অপমানিত বোধ করে। ধর্মচ্যুত হওয়ার ভয়ে সিপাহিরা এই রাইফেলের কার্তুজ ব্যবহার করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে সিপাহিরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহের সূচনা হয়।

২. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের নেতানেত্রী কারা ছিলেন?

দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ:
দিল্লিতে সিপাহিরা দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে বিদ্রোহের সম্রাট বলে ঘোষণা করে এবং তিনিই দিল্লির বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন।

রানি লক্ষ্মীবাঈ:
ঝাঁসিতে রানি লক্ষ্মীবাঈ বিদ্রোহের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী ছিলেন। তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

নানা সাহেব:
কানপুরে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। তিনি পেশোয়া বাজিরাও দ্বিতীয়ের পালিত পুত্র ছিলেন এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

বেগম হজরত মহল:
লখনউতে বেগম হজরত মহল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষদের একত্রিত করে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

৩. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে সিপাহী বিদ্রোহ বলা হয় কেন?

বিদ্রোহের সূচনা:
এই বিদ্রোহের সূচনা হয় দেশীয় সিপাহিদের দ্বারা। বহরমপুর, বারাকপুর, মীরাট, দিল্লি প্রভৃতি সেনানিবাসে সিপাহিরা একত্রিত হয়ে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

নেতৃত্ব:
এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব এবং প্রাণশক্তি ছিল সিপাহিদের হাতে। তারাই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

সাজা:
বিদ্রোহ দমন করার পরে ব্রিটিশরা বিদ্রোহী সিপাহিদের কঠোর শাস্তি দেয়। বেশিরভাগ সিপাহিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় অথবা নির্বাসনে পাঠানো হয়।

এই কারণগুলির জন্য ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে অনেক সময় ‘সিপাহী বিদ্রোহ’ বলা হয়।

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ নিয়ে ১৫টি MCQ প্রশ্ন ও উত্তর

১. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রধান কারণ কী ছিল?
ক) শিক্ষার অভাব
খ) কৃষকদের অসন্তোষ
গ) অনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজের ব্যবহারে ধর্মীয় আঘাত
ঘ) ভারতে শিল্পায়নের অভাব
উত্তর: গ) অনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজের ব্যবহারে ধর্মীয় আঘাত

২. অনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজে কোন উপাদান ব্যবহৃত হয়েছিল?
ক) কাঠের তেল
খ) গরু ও শুকরের চর্বি
গ) প্লাস্টিক
ঘ) লোহা
উত্তর: খ) গরু ও শুকরের চর্বি

Amazon থেকে কিনুন সুন্দর প্লাস্টিক ফুল, আপনার ঘরকে সাজান এক নতুন রূপে!

Plastic Flowers
Buy Now

৩. দিল্লিতে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন?
ক) রানি লক্ষ্মীবাঈ
খ) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ
গ) নানা সাহেব
ঘ) তাতিয়া টোপে
উত্তর: খ) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

৪. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে সিপাহী বিদ্রোহ বলা হয় কেন?
ক) এটি কৃষকদের বিদ্রোহ ছিল
খ) এটি জমিদারদের বিদ্রোহ ছিল
গ) বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল সিপাহিদের মাধ্যমে
ঘ) এটি একটি ব্রিটিশ সিভিল যুদ্ধ ছিল
উত্তর: গ) বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল সিপাহিদের মাধ্যমে

৫. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহে ঝাঁসির নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন?
ক) বেগম হজরত মহল
খ) রানি লক্ষ্মীবাঈ
গ) নানা সাহেব
ঘ) তাতিয়া টোপে
উত্তর: খ) রানি লক্ষ্মীবাঈ

৬. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ কোথায় প্রথম শুরু হয়েছিল?
ক) বারাকপুর
খ) মীরাট
গ) দিল্লি
ঘ) কানপুর
উত্তর: খ) মীরাট

৭. লখনউতে ১৮৫৭ বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কে?
ক) বেগম হজরত মহল
খ) তাতিয়া টোপে
গ) রানি লক্ষ্মীবাঈ
ঘ) শিবাজি
উত্তর: ক) বেগম হজরত মহল

৮. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহে কানপুরের প্রধান নেতা কে ছিলেন?
ক) রানি লক্ষ্মীবাঈ
খ) বেগম হজরত মহল
গ) নানা সাহেব
ঘ) তাতিয়া টোপে
উত্তর: গ) নানা সাহেব

Amazon থেকে কিনুন খুব কম দামে Smart Watch!

Smart Watch
Buy Now

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর

৯. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে কখনও কখনও কী বলা হয়?
ক) ভারতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ
খ) ভারতীয় শিল্প বিপ্লব
গ) সিপাহী যুদ্ধ
ঘ) দাক্ষিণাত্যের যুদ্ধ
উত্তর: ক) ভারতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ

১০. ব্রিটিশরা ১৮৫৭ বিদ্রোহ দমন করার পর দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে কোথায় নির্বাসিত করেছিল?
ক) মিয়ানমার
খ) সিঙ্গাপুর
গ) অস্ট্রেলিয়া
ঘ) দক্ষিণ আফ্রিকা
উত্তর: ক) মিয়ানমার

১১. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের সময় ভারতীয় সেনারা কী উপাধি দিয়েছিল দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে?
ক) দিল্লির বাদশাহ
খ) ভারতের সম্রাট
গ) স্বাধীনতার প্রতীক
ঘ) মুসলিম শাসক
উত্তর: খ) ভারতের সম্রাট

১২. ১৮৫৭ বিদ্রোহের সময় কোন শহর ছিল বিদ্রোহের কেন্দ্রবিন্দু?
ক) কলকাতা
খ) দিল্লি
গ) বোম্বাই
ঘ) মাদ্রাজ
উত্তর: খ) দিল্লি

১৩. ১৮৫৭ বিদ্রোহে কোন গোষ্ঠী ব্রিটিশদের পক্ষে ছিল?
ক) জমিদার
খ) দেশীয় রাজা-মহারাজা
গ) সিপাহি
ঘ) কৃষক
উত্তর: ক) জমিদার

১৪. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ কোন রাজবংশের পতনের ইঙ্গিত দেয়?
ক) মুঘল
খ) মারাঠা
গ) ব্রিটিশ
ঘ) গুপ্ত
উত্তর: ক) মুঘল

Amazon থেকে কিনুন স্টাইলিশ স্কুল ব্যাগ, আপনার শিশুর প্রতিদিনের সঙ্গী!

Plastic Flowers
Buy Now

১৫. ১৮৫৭ বিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর-জেনারেল কে ছিলেন?
ক) লর্ড ক্যানিং
খ) লর্ড ডালহৌসি
গ) লর্ড কার্জন
ঘ) লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক
উত্তর: ক) লর্ড ক্যানিং

প্রশ্ন: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘সামন্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া’ বলার কারণ কী?

ভারতের ইতিহাসে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে অনেক ঐতিহাসিক, যেমন রমেশচন্দ্র মজুমদার এবং তালমিজ খলিফা, ‘সামন্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। এর পেছনে যুক্তি ও তথ্যগুলি হল:

১. সিংহাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা
  • বিদ্রোহীরা মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে পুনরায় দিল্লির সিংহাসনে বসানোর চেষ্টা করেছিল।
  • ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ এবং বেগম হজরত মহল তাদের নিজ নিজ রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন পুনরুদ্ধারের জন্য বিদ্রোহ করেছিলেন।
২. ইংরেজ বিতাড়নের উদ্দেশ্য
  • বিদ্রোহীদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পাওয়া।
  • পাশ্চাত্য সভ্যতা ও আধুনিকতার বিরোধিতার মাধ্যমে স্থানীয় রাজ্যগুলির পুরনো সামন্ততান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করা হয়।
৩. ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ
  • বিদ্রোহীরা ব্রিটিশ শাসনের ফলে যে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটছিল, তার বিরোধিতা করেছিল।
  • গরু ও শুকরের চর্বি মিশ্রিত কার্তুজের বিরুদ্ধে সিপাহিদের আন্দোলন এর একটি উদাহরণ।

প্রশ্ন: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘জাতীয় আন্দোলন’ বলার কারণ কী?

কিছু ঐতিহাসিক, যেমন বিনয় সরকার, ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘জাতীয় আন্দোলন’ বলে অভিহিত করেছেন। এর পেছনে যুক্তি ও তথ্যগুলি হল:

১. জাতীয় জাগরণের সূচনা
  • এই বিদ্রোহে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নিয়েছিল।
  • এটি ধর্ম, বর্ণ, এবং সম্প্রদায়ের সীমা ছাড়িয়ে ভারতীয়দের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অসন্তোষকে একত্রিত করেছিল।
২. সামগ্রিক অংশগ্রহণ
  • এই বিদ্রোহে সিপাহি, কৃষক, স্থানীয় রাজা-মহারাজা, এবং সাধারণ মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল।
  • এটি শুধু একটি আঞ্চলিক ঘটনা ছিল না; ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এই বিদ্রোহে জড়িত ছিল।
৩. ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে একত্রীকরণ
  • বিদ্রোহীরা ব্রিটিশদের বিরোধিতার মাধ্যমে ভারতের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল।
  • ব্রিটিশদের দমননীতি এবং শোষণের বিরুদ্ধে এটি ভারতীয়দের প্রথম বৃহৎ প্রতিরোধ।
৪. ভবিষ্যৎ জাতীয়তাবাদের অনুপ্রেরণা
  • যদিও এটি সফল ছিল না, কিন্তু ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ পরবর্তী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
  • ভারতীয় জনগণের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

উপসংহার:
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে একদিকে সামন্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া বলা হয়, কারণ এতে পুরনো রাজ্যব্যবস্থার পুনর্গঠনের চেষ্টা ছিল। অন্যদিকে, এটি জাতীয় আন্দোলনের রূপও ধারণ করেছিল, কারণ এতে সারা ভারত জুড়ে মানুষের একত্রিত অংশগ্রহণ দেখা যায়।

আরও দেখো: নীল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা

Amazon থেকে কিনুন স্টাইলিশ স্কুল ব্যাগ, আপনার শিশুর প্রতিদিনের সঙ্গী!

Plastic Flowers
Buy Now