জাম ফলের ৫ টি উপকারিতা: জামের উপকারিতা জানলে আপনি সত্যিই অবাক হবেন
জাম এশিয়ার একটি পরিচিত গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফল। এটি জুন, জুলাই বা আগস্ট মাসেও পাওয়া যায়। জাম ভিটামিন ও খনিজ পদার্থসমৃদ্ধ এবং এর মধ্যে ক্যালোরি খুব কম পরিমাণ থাকে। এই ফলের বীজ, পাতা এবং ছালের ঔষধি গুন রয়েছে এবং এটি বিভিন্ন হোমিওপ্যাথিক, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাগুলোতে ব্যবহার করা হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক জামের কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে।
জাম খাওয়ার উপকারিতা:-
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে:
জামে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রোপার্টিজ থাকে যা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। জামে থাকা স্টার্চ ও চিনি রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে শক্তির যোগান দেয়। এছাড়াও, জামে থাকা ফাইবার রক্তের শর্করার উচ্চ মাত্রা কমাতে সহায়তা করে এবং প্রক্রিয়াবদ্ধ শর্করার স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করে। সেক্ষেত্রে, জাম রক্তচাপ ও রক্তের শর্করার নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে উপকারী হতে পারে।
রক্তাল্পতা ও জন্ডিস নিরাময় করে:
জামে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান হলো আয়রন। আয়রন হিমোগ্লোবিন গঠনের প্রধান অংশ এবং রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে মূল ভূমিকা পালন করে। রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার কারণে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়, যা শারীরিক শক্তি ও কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। জামে থাকা আয়রন অ্যানিমিয়ার সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করে এবং শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ উন্নত করে। এছাড়া, জামের মধ্যে থাকা আয়রন পিত্তের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে জন্ডিস নিরাময়ে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: আমন্ড বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে:
জামে আছে অ্যালজিনিক এসিড (alginic acid) বা অ্যালজিট্রিন (algitrin), অ্যান্থোসিয়ানিন (anthocyanin) এবং অ্যান্থোসায়ানাডিনস (anthocyanidin)-এর মতো পুষ্টিসমূহ যা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং এই যৌগগুলো শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস-সমৃদ্ধ যা অক্সিডেশন (oxidation) প্রতিরোধ করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভালো রাখতে অসামান্য অবদান রাখে। এছাড়াও এটি পটাসিয়াম-এর একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডার, যা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে, যা হার্ট অ্যাটাক-এর ঝুঁকি, স্ট্রোক প্রভৃতির ঝুঁকির কারণ।
হাড়ের ক্ষয় রোধ:
জাম একটি পুষ্টিসম্পন্ন ফল এবং এতে ক্যালসিয়াম, লোহা, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন-সি ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান আছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
জামে থাকা ক্যালসিয়াম ও লৌহ হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে ও হাড় ক্ষয় রোধ করে। তাই হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোগীদের এবং বয়স্ক মানুষদের খাবার তালিকায় এই সুস্বাদু ফলটি রাখা উচিত।
আরও পড়ুন: তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে:
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, জাম ফলের কেমো প্রটেক্টিভ (camo protective) বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ক্যান্সারের প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
জামের পুষ্টিমান:
পুষ্টিগুন | পরিমাণ |
---|---|
প্রোটিন | 9.1 % |
ফ্যাট | 4.3 % |
ফাইবার | 17.0 % |
ছাই | 7 % |
ক্যালসিয়াম | 1.3 % |
ফসফরাস | 0.19 % |
আরও পড়ুন: তুলসী পাতার উপকারিতা
FAQs: Frequently Asked Questions
জামের বৈজ্ঞানিক নাম কি?
উত্তর: Syzygium cumini
জাম গাছ কত লম্বা হয়?
উত্তর: জাম গাছ ১৪ থেকে ৬০ ফুট বা এর বেশিও লম্বা হতে পারে।
জাম গাছ কত বছর বাঁচে?
উত্তর: জাম গাছ ১০ থেকে ২৫ বছর বাঁচে।
জাম গাছে কবে ফুল আসে?
উত্তর: জাম গাছে মার্চ এপ্রিলে ফুল আসে।
জামের উপকারিতা কি?
উত্তর: জামের বীজ দিয়ে নানান রোগের আয়ুর্বেদী চিকিৎসা করা হয়, যেমন বহুমুত্র, ইউনানী এবং চৈনিক চিকিৎসাতেও এর ব্যবহার আছে। হজমের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, মাড়ির প্রদাহ ইত্যাদি রোগে জামের বীজ, ছাল ও পাতা ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: থানকুনি পাতার উপকারিতা
👉 স্বাস্থই সম্পদ: Click Here
আরও পড়ুন: