মাধ্যমিক ২০২৩ বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion 2023 | মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩
মাধ্যমিক সাজেশন ২০২৩ বিষয়: বাংলা
প্রশ্নমান: ৫
জ্ঞানচক্ষু
১. ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল তপন। আলোচ্য গল্পে তার জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হওয়ার ঘটনাই তুলে ধরা হয়েছে। গল্পটি পড়ে তপনের চরিত্র সম্পর্কে যা জানা যায় তা হল-
● ১) প্রতিভাবান– তপন একজন প্রতিভাবান কিশোর লেখক। নতুন মেসোকে দেখে যখন সে জানল যে লেখকরা সাধারণ মানুষের মতো হয়, তখন সে ভাবল যে তারও তবে লেখক হতে বাধা নেই। আর তারপরেই একাসনে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলেছিল।
● ২) ভাবুক– তপন স্বভাবত একজন ভাবুক প্রকৃতির ছেলে। এই ভাবুক স্বভাবের জন্য নিজের বিদ্যালয় জীবনের প্ৰথম দিনের স্মৃতিকে অবলম্বন করে গল্প লিখতে পেরেছিল। আবার, ছোটো মেসোকে দেখার আগে পর্যন্ত লেখক সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। তবে, লেখকরা যে কেমন হতে পারে সেই নিয়ে অনেক কিছু ভেবে রেখেছিল যে।
● ৩) মর্যাদাবোধ– তপনের গল্প ছাপা হলে লেখক হিসেবে সে যত প্রশংসা পেয়েছিল, গল্পটা ছাপিয়ে দেওয়ার জন্য নতুন মেসো তার থেকে বেশি প্রশংসা অর্জন করেছিল। এতে তপন অপমানিত বোধ করেছিল।
● ৪) বাস্তববুদ্ধি– ছোটোমাসি যখন তপনের লেখা গল্পটা নতুন মেসোর কাছে নিয়ে যাচ্ছিল, তপন তখন মুখে ‘না-আ-আ’ বলে আপত্তি করলেও মনে মনে ভেবেছিল যে তার লেখার প্রকৃত মূল্য কেবল তিনিই বুঝবেন।
● ৫) মানসিক দৃঢ়তা– নতুন মেসো তপনের গল্পটা কারেকশনের নামে আগাগোড়া পাল্টে দিয়েছিল। এইজন্য তপন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে এরপর সে নিজের গল্প নিজে গিয়ে ছাপতে দিয়ে আসবে, তাতে সে গল্প ছাপা হোক বা না হোক।
২. আজ তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।’ কার, কোন দিনকে সবচেয়ে দুঃখের দিন বলে মনে হয়েছে? তার এমন মনে হওয়ার কারণ কি?
উত্তর: আলোচ্য অংশটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পের অন্তর্গত। এই উক্তিটি গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের।
● যেদিন তপনের লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল, ‘সবচেয়ে দুঃখের দিন’ বলতে ঐ দিনটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
● গল্পে আমরা জানতে পারি যে, তপন একটি গল্প লিখেছিল, সেই গল্পটি তেমন ভালো মানের না হওয়া স্বত্ত্বেও তপনের ছোটমেসো তার শ্বশুরবাড়িতে তার খ্যাতি বৃদ্ধি করার জন্য তা ছাপিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দেন। সত্যি সত্যিই তপনের লেখাটি সন্ধ্যাতারা নামক একটি পত্রিকায় তপনের নামে ছাপা হয়। কিন্তু ঐ লেখাটি পড়ার সময় তপন বুঝতে পারে যে লেখাটি তপনের নামে ছাপা হয়েছে ঠিক কথা, কিন্তু গল্পের সমস্তটাই ছোটমেসো নিজের মতো করে পরিবর্তন করেছেন। অর্থাৎ তপনের নামে ছাপা গল্প আদতে ছোটমেসোর লেখা। এই ঘটনা ছোট্ট তপনের মনে গভীর প্রভাব ফেলে এবং ঐ দিনটিকে সে সবচেয়ে দুঃখের দিন বলে চিহ্নিত করে।
৩. “শুধু এই দুঃখের মুহুর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন”- কী সংকল্প করেছিল? তার ‘এই দুঃখের মুহুর্তের’ প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।
উত্তর: আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপন সংকল্প করেছিল যে যদি কোনোদিন তার লেখা ছাপাতে দিতে হয় তো সে নিজে গিয়ে সম্পাদককে তার লেখা দিয়ে আসবে- তাতে তার গল্প ছাপানো হোক বা না হোক।
● ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষে মামার বাড়িতে গিয়েছিল তপন। সেখানে সে নিজের হোমটাস্কের খাতায় একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলেছিল। আসলে, তপনের নতুন মেসো ছিল একজন লেখক এবং তাকে দেখেই তপনের লেখক হওয়ার বাসনা জেগেছিল। যাইহোক, তপনের গল্প ছোটোমাসির হাত দিয়ে নতুন মেসোর কাছে পৌঁছায়। মেসো তপনের লেখার প্রশংসা করেন এবং সেই গল্প কোনো পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গুনতে থাকে।
বেশ কিছুদিন পর নতুন মেসো একসংখ্যা ‘সন্ধ্যাতারা’ নিয়ে তপনদের বাড়িতে এলেন। পত্রিকা দেখে তার বুকের রক্ত ছলকে উঠেছিল। সে বুঝতে পেরেছিল যে তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
সত্যিই তপনের গল্প ছাপা হয়েছিল। কিন্তু গল্পটা কারেকশন করার এবং ছাপিয়ে দেওয়ার পুরো কৃতিত্বের দাবীদার হয় তার মেসো। গল্প ছাপা হলে যে আহ্লাদ হবার কথা, সেই আহ্লাদ খুঁজে পায়না তপন।
গল্পটা পড়তে গিয়ে তপন বুঝতে পারে যে নতুন মেসো আগাগোড়া কারেকশন করে পুরো গল্পটাই পাল্টে ফেলেছেন। সেই গল্পে তপনের হাতের ছোঁয়া ছিল না- সবকটা লাইন তার অপরিচিত। বইটা ফেলে রেখে ছাদে গিয়ে সে শার্টের তলাটা দিয়ে চোখ মুছে। এরপরেই তপন এই সংকল্প করেছিল।
অদল বদল
১. ‘অদল বদল’ গল্পে সাম্রপদায়িক সম্প্রীতির যে চিত্র প্রকাশিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখ।
উত্তর: গুজরাতি সাহিত্যজগতের মানবতাবাদী লেখক পান্নালাল প্যাটেল রচিত ও অর্ঘ্যকুসুম দত্তগুপ্ত অনূদিত ‘অদল বদল’ গল্পে একদিকে যেমন দুটি সমবয়সী কিশোর অমৃত ও ইসাবের নিবিড় বন্ধুত্বের প্রকাশ ঘটেছে, অন্যদিকে ভারতাত্মার মূলীভূত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুরটি স্পষ্ট হয়ে উঠে গল্পটি একটি সার্থক ছোটোগল্পে পরিণত হয়েছে।
আলোচ্য গল্পে অমৃত ও ইসাব প্রতিবেশী, অভিন্ন হৃদয় সুহৃদ। অথচ অমৃত জাতিতে হিন্দু, ইসাব মুসলমান।
গল্পে উভয়ের চরিত্রেই বেশ কিছু বৈপরীত্য চোখে পড়লেও পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মনোভাব বারবার প্রতিফলিত হয়েছে। ইসাবের মতো নতুন জামা পাওয়ার জন্য অমৃত বাবা – মায়ের কাছে আবদার করেছে, আবার বন্ধুকে বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে নিজের নতুন কেনা জামাটি পড়িয়ে দিতেও দ্বিধাবোধ করেনি। উল্টোদিকে বন্ধুর অপমানের প্রতিশোধ নিতে নতুন জামার পরোয়া না করে কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে পিছিয়ে আসেনি ইসাবও। এই পারস্পরিক নিখাদ ভালোবাসায় ধর্ম কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। এই সম্পর্কে ছিল শুধুই বন্ধুত্বের পেলব স্পর্শ। মানবিক সংবেদনেই তারা ছিল পরস্পরের আপনজন।
কবি অতুলপ্রসাদের কথায় –
“নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান
বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান।”
বিবিধের মাঝে এই ঐক্যের এই আদর্শ ভারতীয় সংস্কৃতির মূল সুর । ভারতের এই সুমহান ঐতিহ্য লেখক পান্নালাল প্যাটেল তাঁর লেখায় বারবার ফুটিয়ে তুলেছেন। অমৃতের মা তথা বাহালি বৌদি ও ইসাবের বাবা হাসানের আচরণ ও কথোপকথনেও পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির দিকটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অমৃত – ইসাবের জামা অদলবদলের কথা জানতে পেরে ইসাবের বাবা সস্নেহে অমৃতকে বুকে জড়িয়ে ধরেছে। অমৃতকে নিজের সন্তানের স্বীকৃতি দিয়ে হাসান ধর্মীয় বিভাজনের উপরে উঠে মানবিক উদারতার পরিচয় দিয়েছেন।
সুতরাং আলোচ্য গল্পে দেখা যায়, কোনো প্রথাগত, আচারসর্বস্ব ধর্ম কখনই সুমহান মানবতার জায়গা নিতে পারে না। এইভাবে ‘অদল বদল’ গল্প সম্প্রদায়গত বিভেদ নয়, বরং বন্ধুত্বের মতো মানবিক, হার্দিক সম্পর্ক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিশ্বস্ত ছবি তুলে ধরে।
২. “অমৃত সত্যিই তার বাবা মা কে খুব জ্বালিয়েছিল” – অমৃত কীভাবে বাবা – মা কে জ্বালাতন করেছিল ? অবশেষে অমৃতের মা কী করেছিলেন?
উত্তর: গুজরাতি সাহিত্যজগতের মানবতাবাদী লেখক পান্নালাল প্যাটেল রচিত ও অর্ঘ্যকুসুম দত্তগুপ্ত অনূদিত ‘অদল বদল’ গল্পটি দুটি অভিন্নহৃদয় বন্ধু অমৃত ও ইসাবের নিবিড় বন্ধুত্ব তথা মানবিক সম্পর্ককে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে।
গুজরাতের এক প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের এই দুই কিশোর বালকের মধ্যে বন্ধুত্বের গাঢ়ত্ব এতটাই বেশি ছিল ছিল যে, তারা পোশাক আশাকের দিক থেকেও অভিন্ন থাকতে চায়। দুজনের বাবাই ছিলেন ক্ষেত মজুর, অভাব অনটনকে সহ্য করেই ছিল তাদের জীবনযাপন।
একদিন, ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে যাওয়ায় তার বাবা তাকে একটা নতুন জামা কিনে দেন। তার দেখাদেখি অমৃতও নতুন জামার জন্য বাবা – মায়ের কাছে বায়না করতে থাকে। ফতোয়া জারি করে সে বলে, নতুন জামা কিনে না দেওয়া পর্যন্ত সে বিদ্যালয়মুখী হবে না। এমনকি নিজের জামার ছোটো একটা ছেঁড়া জায়গা আঙুল ঢুকিয়ে আরও বড় করে ছিঁড়ে দেয়। মা অনেকবার অমৃতকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু হার মানতে বাধ্য হন। অমৃত খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয়, রাতে বাড়িতে ফিরতে পর্যন্ত নিমরাজি হয়ে ইসাবদের বাড়ির গোয়ালঘরে লুকিয়ে থাকে।
এইভাবে নাছোড় অমৃত তার বাবা মাকে জ্বালাতন করেছিল।
● অমৃতের মা অমৃতকে তার এই জেদের জন্য বেকায়দায় ফেলতে কৌশলে নতুন জামা কেনার বিষয়টি তার বাবাকে জানাতে বলেন। এও বলেন, ইসাবকে জামা কিনে দেবার আগে বাবা তাকে খুব মেরেছিল। নাছোড়বান্দা অমৃত জামা কেনার শর্তে মার খেতেও রাজি হয়ে যায়। অমৃতের মা জানতেন, অমৃত বাবার মুখের ওপর কথা বলবে না। আবার অমৃত জানতো, মা যতক্ষণ না পর্যন্ত জামা কিনে দেবার কথা বলবেন, ততক্ষণ বাবার রাজি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
অবশেষে অমৃতর জেদের কাছে হার মেনে মা অমৃতের বাবাকে রাজি করিয়ে নতুন জামা কিনিয়ে দিয়েছিলেন।
৩. “অমৃতের জবাব আমাকে বদলে দিয়েছে ” – অমৃতের কোন জবাবের কথা বলা হয়েছে ? সেই জবাব বক্তাকে বদলে দেওয়ার কারণ কী?
উত্তর: গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ গল্প থেকে আলােচ্য উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত। আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন ইসাবের বাবা পাঠান হাসান।
অমৃতের নিম্নোক্ত জবাবে পাঠানের আত্মদর্শন ঘটেছিল – “ ইসাব অমৃতকে জিজ্ঞেস করেছিল, তাের বাবা যদি তােকে মারে কী হবে? অমৃত কী জবাব দিয়েছিল জানেন? বলেছিল কিন্তু আমার তাে মা রয়েছে।” বন্ধু অমৃত মাতৃহারা ইসাবকে বাবার শাসনের হাত থেকে বাঁচাতে চেয়েছিল।
তাই নিজের নতুন জামা বন্ধুর গায়ে চড়িয়ে দিয়ে বন্ধুর ছেড়া জামা নিজের গায়ে চড়িয়ে নিয়েছিল।
● উপরিউক্ত জবাব হাসানকে বদলে দিয়েছিল। কারণ-
অবক্ষয়িত সমাজে বন্ধুত্বের বড়ােই অভাব।
অথচ মাতৃহারা বন্ধুর মাতৃত্বের অভাবকে আবিষ্কার করতে অমৃতের বিন্দুমাত্র অসুবিধে হয়নি। দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের , দুই ভিন্ন পরিবারের দুই সতীর্থের এই আন্তরিক মেল বন্ধন হাসানের আত্মোপলব্ধি ঘটিয়েছিল।
মানবিকতাশূন্য অবক্ষয়িত সমাজে যখন সহােদরের মধ্যে হিংসা – দ্বেষ , মূল্যবােধহীনতার প্রকাশ ঘটে চলেছে। সেই সমাজের বুকে দাঁড়িয়ে অমৃত ইসাবের প্রতি যে নিবিড় অনুভূতির প্রকাশ ঘটিয়েছে তা সকলকে বিস্মিত করে।
জাতি হিংসাকে দূরে সরিয়ে সম্প্রীতির বাতাবরণ সৃষ্টির মধ্য দিয়েই হাসানের আত্মদর্শন ঘটেছিল।
D.El.Ed Lesson-Plan Class-4 Aguner-Byabohar চতুর্থ শ্রেণীর “আমাদের পরিবেশ” বিষয়ের “আগুনের ব্যবহার” পাঠের একটি Lesson Plan শেয়ার করা হলো। আশাকরি এটা ...