শরীরের জন্য গাজরের নানা রকমের উপকারিতা রয়েছে। গাজরে বিটা ক্যারোটিন, ফাইবার, ভিটামিন A, ভিটামিন K, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো নানান পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এখানে আমরা গাজরের ৭ টি উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো।
▣ গাজরের পুষ্টি উপাদান:
একটি মাঝারি আকারের (৭৮ গ্রাম) গাজরের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও তার পরিমাণ সম্পর্কে নীচে উল্লেখ করা হলো।
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ (একটি মাঝারি আকার / 78 গ্রাম) |
---|---|
ক্যালোরি | ৩০ |
ফাইবার | ২ গ্রাম |
চিনি | ৫ গ্রাম |
প্রোটিন | ১ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৭ গ্রাম |
খনিজ | |
সোডিয়াম | ৬০ মিলিগ্রাম |
পটাসিয়াম | ২৫০ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ২% DV |
আয়রন | ২% DV |
ভিটামিন | |
ভিটামিন-এ | ১১০% DV |
ভিটামিন সি | ১০% DV |
▣ গাজরের ৭ টি উপকারিতা:
১. গাজরে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন যা শরীরে ভিটামিন A এর চাহিদা মেটায়। ফলে আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। এছাড়াও বিটা-ক্যারোটিন আমাদের চোখকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচায়, চোখে ছানি পড়তে দেয় না।
২. গাজরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। গাজরের দুটি প্রধান ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল ক্যারোটিনয়েড এবং অ্যান্থোসায়ানিন। ক্যারোটিনয়েডগুলি গাজরকে তাদের কমলা এবং হলুদ রঙ দেয়, অন্যদিকে অ্যান্থোসায়ানিন লাল এবং বেগুনি রঙের জন্য দায়ী।
৩. উপরে গাজরে থাকা যে সমস্ত অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কথা বললাম, ওগুলি আমাদের হার্টের জন্যও ভাল। এছাড়াও গাজরে থাকা পটাসিয়াম আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরণের ফাইবার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গাজরের উপকারিতা অনস্বীকার্য। গাজরে থাকা ভিটামিন C আমাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে, আয়রন গ্রহণ ও ব্যবহার করতে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৫. কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূরীকরণে গাজর খুব উপকারী। আপনার যদি এই সমস্যা হয় তবে কিছু কাঁচা গাজর খেয়ে দেখুন। গাজরে প্রচুর ফাইবার আছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে সাহায্য করে।
৬. গাজর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক। ডায়াবেটিস রোগীদের গাজরের মতো কম শ্বেতসার যুক্ত শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। গাজরে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। গাজর ভিটামিন A এবং বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
৭. গাজরে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন K আছে। তাই হাড় মজবুত করার জন্য গাজর গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন:
▣ গাজরের জুসের উপকারিতা:
- দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
- ত্বক উজ্জ্বল করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
- ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
▣ গাজরের জুস বানানোর নিয়ম:
উপকরণ:
- ২-৩ টি মাঝারি আকারের গাজর
- ১/২ কাপ জল
- বিট লবণ
পদ্ধতি:
- গাজরের খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন।
- এই টুকরোগুলো ও অল্প পরিমাণ জল একটি ব্লেন্ডারে রেখে ব্লেন্ড করে নিন।
- একটি ছাঁকনিতে ব্লেন্ড করা গাজর রেখে চামচ দিয়ে চেপে রস বের করুন।
- প্রয়োজন মতো এই রসে বিট লবণ যোগ করতে পারেন।
- সকালের নাস্তার সাথে এই জুস পান করুন।
▣ গাজরের অপকারিতা:
নির্দিষ্ট পরিমাণে গাজর খেলে তেমন কোনো অপকারিতা নেই। কিন্তু অত্যধিক পরিমাণে গাজর খাওয়া অনিরাপদ হতে পারে।
গাজর বিটা-ক্যারোটিনে সমৃদ্ধ। অত্যধিক বিটা-ক্যারোটিন গ্রহণ করলে এটি আপনার ত্বককে কমলা-হলুদ বর্ণে পরিণত করতে পারে। এই অবস্থাকে ক্যারোটেনমিয়া বলা হয়। এই অবস্থা চরম পর্যায়ে পৌঁছলে, এটি ভিটামিন A এর কার্যকারিতায় বাধা দেয় এবং যার ফলে দৃষ্টি, হাড়, ত্বক, বিপাক বা ইমিউন সিস্টেম প্রভাবিত হয়।
Disclaimer: এখানে দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য। এটি কোনো পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। কোনো কিছু গ্রহণ করার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। |
👉 স্বাস্থই সম্পদ: Click Here
👉 Subscribe Our YouTube Channel: Click Here
আরও পড়ুন:
দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ার ৮টি বৈজ্ঞানিক উপায়
আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা