নিম পাতার উপকারিতা

জেনে নিন নিম পাতার অসংখ্য উপকারিতা ও ঔষধি গুন:

বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, ফোঁড়া থেকে শুরু করে আলসার, একজিমার মতো কঠিন অসুখের নিরাময়ে নিমপাতার উপকারিতা অনস্বীকার্য। প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতা রোগ নিরাময়ের জন্য বিখ্যাত। আদি সংস্কৃত চিকিৎসা গ্রন্থেও নিমের ফল, বীজ, তেল, পাতা, শিকড় এবং বাকলের উপকারিতা উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের চারপাশেই ছড়িয়ে থাকা এই নিমের ঔষধি গুন সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আসুন জেনে নিই নিমের উপকারিতা সমূহ।

নিম পাতার পুষ্টিমূল্য:

এক কাপ নিম পাতা (প্রায় 35 গ্রাম) -এর মধ্যে যে পুষ্টিগুন রয়েছে:

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ
ফাইবার6.77 গ্রাম
ফ্যাট (চর্বি)3.3 গ্রাম
ক্যালসিয়াম178.5 মিলিগ্রাম
আয়রন5.98 মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম44.45 মিলিগ্রাম
ফসফরাস28 মিলিগ্রাম
সোডিয়াম25.27 মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম88.9 মিলিগ্রাম

নিম পাতার উপকারিতা:

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিম পাতার ভূমিকা:

গবেষণায় দেখা গেছে যে নিম পাতার রস হাইপোগ্লাইসেমিক প্রভাবকে বাধা দিয়ে ডায়াবেটিস রোগ নিরাময় করে। সেদ্ধ নিম পাতার নির্যাস নিয়মিত সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় থাকে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

আরও পড়ুন: শসা খাওয়ার উপকারিতা

চুলের যত্নে নিম পাতা:

নিমের মধ্যে রয়েছে আজাদিরাকটিন (Azadirachtin)। এই আজাদিরাকটিন আমাদের চুলের মধ্যে থাকা উকুনের মতো পরজীবীদের বৃদ্ধি ও প্রজনন ব্যাহত করে। ফলে আমাদের চুলের স্বাস্থ্য বজায় থাকে।

দাঁতের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা:

নিমের পাতার নির্যাস দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধে খুব উপকারী। নিমের পাতায় নিম্বিডিন (nimbidin), আজাদিরাকটিন (Azadirachtin) এবং নিমবিনিন (nimbinin) নামক এন্টিবায়োটিক থাকে যা দাঁতের ক্ষয়কারী ব্যাকটেরিয়া অপসারণে সহায়তা করে।

চোখের সমস্যা দূরীকরণে নিম পাতার ভূমিকা:

নিম পাতা চিবিয়ে খেলে আমাদের চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।

হজমশক্তি বৃদ্ধি :

নিম পাতায় 7.1 শতাংশ প্রোটিন এবং 22.9 শতাংশ কার্বোহাইড্রেট থাকে। এছাড়াও ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি এবং ক্যারোটিন খনিজ উপাদানের ভালো উৎস নিম পাতা। এগুলি আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

যৌবন ধরে রাখতে নিম পাতার উপকারিতা:

নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ভিটামিন ই, যা আমাদের চামড়ার ভাঁজ এবং গাঢ় দাগ দূর করে করে এবং ত্বককে দৃঢ় এবং টানটান করে তোলে।

ত্বকের সংক্রমণে নিমপাতার উপকারিতা:

নিম পাতায় ও নিম তেলে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকে যা ফোঁড়া সহ ত্বকের সংক্রমণের রোধে খুব উপকারী।

আরও দেখুন: বয়স ক্যালকুলেটর

FAQs Frequently Asked Questions

১. নিম পাতা কখন গ্রহণ করা উচিত?

উত্তর: প্রতিদিন সকালে খালি পেতে ১ – ২ টা নিমপাতা চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে। অথবা ৪ – ৫ টি নিমপাতা সেদ্ধ করে তার নির্যাস পান করতে পারেন।

২. নিম পাতার ক্ষতিকর দিকগুলি কি?

উত্তর: অল্প মাত্রায় নিমপাতা খেলে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু বেশি মাত্রায় দীর্ঘ সময় ধরে নিম পাতা গ্রহণ করা অনিরাপদ। এতে কিডনি এবং লিভারের ক্ষতি হতে পারে।

৩. নিমের কোন অংশ ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়?

উত্তর: নিম গাছের সমস্ত অংশ- পাতা, ফুল, বীজ, ফল, শিকড় এবং বাকল প্রাচীনকাল থেকেই প্রদাহ, সংক্রমণ, জ্বর, চর্মরোগ এবং দাঁতের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

৪. নিমের রস খাওয়া কি ভালো?

উত্তর: নিমের রস ডায়াবেটিস, লিভারের সমস্যা এবং মাইক্রোবিয়াল সংক্রমণ রোধ করে। তাই নিমের রস খাওয়া অবশ্যই ভালো। তবে নিমের রস খাওয়া শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:
এখানে দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য। এটি কোনো পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। কোনো কিছু গ্রহণ করার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

👉 স্বাস্থই সম্পদ: Click Here

আরও পড়ুন:

তুলসী পাতার উপকারিতা

থানকুনি পাতার উপকারিতা

আরও পড়ুন:

বয়স বাড়লে চুল সাদা হয়ে যায় কেন?

👉 Subscribe Our YouTube Channel: Click Here

Leave a Comment

close

You cannot copy content of this page