জেনে নিন পুরাতন আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা | আর নয় ভোগান্তি
আমাশয়ের সমস্যা শুরু হয় অন্ত্রে প্রদাহের কারণে। আমাশয়ের সমস্যায় মলে রক্ত বা শ্লেষ্মা আসতে পারে, পেটের নীচের দিকে ব্যথা অনুভূত হতে থাকে। বৃহদন্ত্র বা পাকস্থলীতে সংক্রমণের কারণে আমাশয় হয়। আমাশয় দীর্ঘস্থায়ী হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই সঠিক সময়ে এর সঠিক চিকিৎসা দরকার।
আমাশয় থেকে মুক্তি পেতে কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
বাটারমিল্ক:
বাটারমিল্ক পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ উপশম করে। বাটারমিল্কে উপস্থিত লবণ ডায়রিয়াজনিত জলশূন্যতা প্রতিরোধ করে।
বাটারমিল্ক কিভাবে তৈরী করবেন?
এক গ্লাস বাটার মিল্ক, এক চিমটে সৈন্ধব লবণ, এক বা দুই চা চামচ জিরা গুঁড়া, এক বা দুই চা চামচ কালো গোলমরিচের গুঁড়া ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর দিনে দুইবার- জলখাবার বেলা ও দুপুরবেলা মধ্যাহ্ন ভোজনের সময় এটি পান করুন।
আদা গুঁড়ো:
আদার মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য আছে। তাই আদা তলপেটের ব্যথা দূর করে এবং হজমের উন্নতি ঘটায়।
বাটারমিল্কের সাথে আদা গুঁড়ো মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিন এবং দিনে তিন থেকে চারবার এটি পান করুন।
আরও পড়ুন: তুলসী পাতার উপকারিতা
মেথি:
মেথি অনেক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়। মেথির শীতলভাব পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ উপশম করে। এটি শরীর থেকে টক্সিন এবং ক্ষতিকারক জীবাণু দূর করে। ফলে অন্ত্র সবল হয়।
এক চা চামচ মেথি বীজের গুঁড়া এবং এক কাপ দই বা এক গ্লাস বাটারমিল্ক ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এটি পান করুন। মেথি বীজের গুঁড়ো জলের সাথে মিশিয়েও পান করতে পারেন।
কাঁচা পেঁপে:
পেঁপে পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন বদহজম, আমাশয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। পেঁপেতে প্যাপেইন এবং কাইমোপাপেইন নামক প্রোটিওলাইটিক উৎসেচক আছে যা অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ। তাই আমাশয় উপশমে পেঁপে কার্যকারী হতে পারে।
পেঁপে কিভাবে খাবেন?
প্রথমে পেঁপের খোসা ছাড়িয়ে প্রায় 15 মিনিট ধরে জলে সিদ্ধ করুন। তারপর কিছুটা ঠান্ডা করে ছেঁকে নিন এবং হালকা গরম অবস্থায় ওই জল পান করুন। দিনে দুই থেকে তিনবার পান করা যেতে পারে।
কাগজি লেবু:
আমাশয় রোগের চিকিৎসায় লেবু ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি গবেষণায় জানা গেছে যে, লেবু তার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যর কারণে ডায়রিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারে।
কিভাবে লেবু ব্যবহার করবেন?
প্রথমে এক গ্লাস জল হালকা গরম করে নিন। তারপর তাতে অর্ধেকটা লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার পান করতে পারেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এখানে দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য। এটি কোনো পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। কোনো কিছু গ্রহণ করার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। অন্যথায় আমরা কোনো মতেই দায়ী থাকবো না। |
আমাশয় রোগের লক্ষণ:
আমাশয়ের লক্ষণগুলি হল- ঘন ঘন পায়খানা হয়, মলের সাথে রক্ত বা শ্লেষ্মা নির্গত হয়, পেটের নীচের অংশে ব্যাথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি।
আমাশয় in english:
আমাশয়কে ইংরেজিতে বলা হয় Dysentery
FAQs: Frequently Asked Questions
প্রশ্ন: আমাশয় কেন হয়?
উত্তর: বিভিন্ন কারণে আমাশয় হতে পারে। তবে দূষিত জল এবং সংক্রমিত খাবার আমাশয়ের প্রধান কারণগুলির মধ্যে অন্যতম।
প্রশ্ন: আমাশয় কি সংক্রামক?
উত্তর: হ্যাঁ, আমাশয় এক ব্যক্তির থেকে অপর ব্যক্তির দেহে সংক্রমিত হতে পারে।
আমাশয় একটি ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী ঘঠিত রোগ। এই ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী সংক্রামিত ব্যক্তির মল থেকে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
প্রশ্ন: আমাশয় রোগের জীবাণুর নাম কি?
উত্তর: আমাশয় রোগের জীবাণুর নাম Shigella, Salmonella, Campylobacter এবং Escherichia coli (E. coli).
প্রশ্ন: ডায়রিয়া এবং আমাশয়ের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: ডায়রিয়ায় মল জলের মত বের হয় এবং আমাশয়ে মলের সাথে রক্ত বের হয়।
প্রশ্ন: আমাশয় হলে কি কি খাওয়া উচিত নয়?
উত্তর: আমাশয় হলে মিষ্টি, অধিক মশলা, আচার, ভাজা খাবার, বাশি খাবার খাওয়া উচিত নয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এখানে দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য। এটি কোনো পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। কোনো কিছু গ্রহণ করার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। অন্যথায় আমরা কোনো মতেই দায়ী থাকবো না। |
ঘরোয়াভবে আমাশয় রোগের চিকিৎসা সম্ভব। যদি সঠিকভাবে পালন করা হয়।